পেরিয়ে গেছে দুটি বছর। স্বাভাবিক হচ্ছে চুড়িহাট্টার জনজীবন। মৃত্যুপুরী সেই ওয়াহেদ ম্যানশনেও ফিরে এসেছে রং। কিন্তু ভুক্তভোগীদের জীবনে এখনো ফেরেনি স্বাচ্ছন্দ্য। মেলেনি কোনো ধরনের সহযোগিতা। এমনই অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় গিয়ে দেখা যায়, চারতলা ওয়াহেদ ম্যানশনের প্রতিটি ফ্লোর সংস্কার করা হয়েছে। এখন দরজা-জানালা লাগানোর কাজ চলছে। ভবনটির উত্তর পাশে বড় একটি ব্যানার টানানো।
সেখানে লেখা, ‘নোটিশ; ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আদেশক্রমে ওয়াহেদ ম্যানশন ভবন সংস্কার কাজ শহীদুল্লাহ নিউ অ্যাসোসিয়েট লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হচ্ছে। ঠিকাদার: সুনির্মাণ ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড’। অনেক খুঁজেও ভবনের ভেতর মালিক এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি।
তবে নতুন করে এই ভবনটিতে বাস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভবন মালিকেরা। এর মধ্যে ভবন মালিক হাসান এবং সোহেল জামিনে বেরিয়ে এসেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর অভিযোগ, এখন পর্যন্ত তাদের কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা দেয়নি সিটি করপোরেশন। অথচ সংস্থাটির তত্ত্বাবধানে এই ভবন সংস্কার করা হচ্ছে। এর মধ্যে ভবন মালিকরা জামিন পেয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে অগ্নিকাণ্ডের বিচার পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে ভুক্তভোগীদের মাঝে।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে ওয়াহেদ ম্যানশনে একটি রাসায়নিকের গুদাম থেকে ব্যাপক বিস্ফোরণ ঘটে। ওই ঘটনায় ৭১ জন নিহত হন। তখন ভবন মালিক সোহেল এবং হাসানের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সংস্থার সভাপতি নাসির উদ্দীন বলেন, ‘ইতোমধ্যে ভবনটি সংস্কারের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। অথচ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য সিটি করপোরেশন থেকে কোনো উদ্যোগই নেয়া হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকেও তেমন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ ওয়াহেদ ম্যানশন মালিকদের কারণে ৭১ জন মানুষ পুড়ে মারা গেল।’
এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-৩-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বাবর আলী মীর। তিনি সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসেরের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। পরে আবু নাসের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের পর ডিএসসিসি’র সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন নিহতদের পরিবারের কয়েকজনকে সিটি করপোরেশনে চাকরি ও দোকান দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ পরিবার এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।’