আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি। সারাবিশ্ব এই দিনটাকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে পালন করে থাকে। বাংলাদেশে এটিকে বলা হয় ভালবাসা দিবস। আবার আজকের দিনে বাংলা সনের বসন্ত ঋতুর আগমনে ফাল্গুনের ১ তারিখ। দুই উদ্দেশ্যে বাঙালিদের কাছে এটি একটি আনন্দের দিন।
ভ্যালেন্টাইন্স ডে’র ইতিহাস- ২৬৯ সালে ইতালির রোম নগরীতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স নামে একজন খৃষ্টান পাদ্রী ও চিকিৎসক ছিলেন। ধর্ম প্রচারের অভিযোগে তৎকালীন রোম সম্রাট দ্বিতীয় ক্রাডিয়াস তাকে বন্দী করেন। কারণ তখন রোমান সাম্রাজ্যে খৃষ্টান ধর্ম প্রচার নিষিদ্ধ ছিল। বন্দী অবস্থায় তিনি জনৈক কারারক্ষীর দৃষ্টিহীন মেয়েকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তোলেন। এতে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাই তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই দিন ১৪ই ফেব্রুয়ারি ছিল। অতঃপর ৪৯৬ সালে পোপ সেন্ট জেলাসিউও ১ম জুলিয়াস ভ্যালেন্টাইন’স স্মরণে ১৪ই ফেব্রুয়ারিকে ভ্যালেন্টাইন’ দিবস ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশে ভালবাসা দিবস – বাংলাদেশেও বর্তমানে এই দিবস পালন খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে তরুণ সমাজের কাছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি ও বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির মিশ্রণে ভিন্নভাবে “বিশ্ব ভালোবাসা দিবস” নামে এটি পালিত হয়। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১৩ই ফেব্রুয়ারি তারিখে বসন্ত উৎসব তথা “পহেলা ফাল্গুন” উদযাপিত হতো। তার ঠিক পরের দিনই ভালোবাসা দিবস পালন করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি বাংলা একাডেমির সংস্কারে দু’টো দিনই এখন পালিত হয় ১৪ ফেব্রুয়ারিতে। বিধায় অনেকের কাছেই এই দিবসটি বেশ উৎসবমুখর হয়ে ওঠেছে। এই “ভালোবাসা দিবস” পালন করার আয়োজন হিসেবে সামাজিক গনমাধ্যম খুব বড় একটা ভূমিকা পালন করে।
পহেলা ফাল্গুন- বাংলা সনের পৌষ ও মাঘ মাসের শীত কাটিয়ে বসন্তের আগমনী নিয়ে আসে ফাল্গুন। শীতের জীর্ণতা ও জমে থাকা ধরনীকে নতুন রঙ দিতে বসন্ত এসে কড়া নাড়ে বাংলার প্রকৃতিতে। তখন গাছে গাছে নতুন পাতার পাশপাশি ফুল ফুটে প্রতিটা গাছেই। নতুন কচি পাতা ও ফুলের ঘ্রাণে অদ্ভুত সুন্দর এক পরিবেশের সৃষ্টি হয় সারা দেশে। নতুন রঙে প্রকৃতির সাঁজের সাথে নিজেদেরকেও নতুন করে সাঁজাতে পছন্দ করে বাঙালিরা। তাই বেশ ঘটা করেই পালন করে বসন্ত উৎসব।