বীর মুক্তিযোদ্ধাদের খসড়া তালিকা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) তিনি

এ তথ্য জানান। এর আগে খসড়া তালিকা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছিলেন মন্ত্রী।

মোজাম্মেল হক বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের প্রতিবেদন আসলেই আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের খসড়া তালিকা প্রকাশ করব। আমরা আশা করছি আগামী ১৫ তারিখে (ফেব্রুয়ারি) খসড়া তালিকা প্রকাশ করতে পারব। খসড়া তালিকায় কতজন বীর মুক্তিযোদ্ধা থাকছেন সেটা এখনই বলতে পারছি না। ১৫ ফেব্রুয়ারি খসড়া তালিকা প্রকাশের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি আমরা।’

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ইতোমধ্যে জানিয়েছেন, আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশের অংশ হিসেবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) অনুমোদন ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকাশিত বেসামরিক গেজেট যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। গত ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৭১তম সভায় এ যাচাই-বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন, ২০০২’ এর ধারা ৭(ঝ) ব্যত্যয় ঘটিয়ে জামুকার সুপারিশ ছাড়া যাদের নাম বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বেসামরিক গেজেটে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে ৩৯ হাজার ৯৬১ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ভারতীয় তালিকা বা লাল মুক্তিবার্তা বা মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃত ৩৩ ধরনের প্রমাণকে অন্তর্ভুক্ত থাকলে, তিনি যাচাই-বাছাইয়ের আওতার বাইরে থাকবেন। এ ধরনের কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম ভুলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বা জামুকার ওয়েবসাইটে যাচাই-বাছাইযোগ্য তালিকায় প্রকাশিত হয়ে থাকলে, তালিকা থেকে নাম বাদ দেয়ার জন্য উপযুক্ত প্রমাণসহ গত ৩০ জানুয়ারি সকাল ১০টায় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়/মহানগরের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগাযোগের অনুরোধ জানিয়েছিল মন্ত্রণালয়।

গত ১৮ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনলাইনে এক লাখ ৪০ হাজার মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্তির কাজ শেষ হয়েছে। ৩৪ হাজার মুক্তিযোদ্ধা, যাদেরও গেজেট আছে তাদের নিয়মিত করার জন্য আগামী ৩০ জানুয়ারি উপজেলায় তাদের গেজেট যাচাই হবে। আমরা অপেক্ষা করছি হয়তো এক লাখ ৭০ হাজারের মধ্যেই এটা (মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা) সীমিত থাকবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবার কিছু বিচারাধীন আছে, অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, অনেকের আবেদন চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। যারা আপিল করেছে তাদের আবেদন আছে। এগুলো নিষ্পত্তি করলে হয়তো আরও ২-৫ হাজার হতে পারে। আমার ধারণা কোনো অবস্থায় সাধারণ মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা এক লাখ ৭৫ হাজারের ওপরে যাবে না।’

এছাড়া শহীদ, যুদ্ধাহত, খেতাবপ্রাপ্ত, বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা আরও ১৫ হাজারের মতো হবে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আশা করছি ২ লাখের নিচেই সব ক্যাটাগরির মুক্তিযোদ্ধা থাকবে, যেটা ইতোমধ্যে অনেক বেশি হয়েছিল।’