প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন;

“বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২১’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি বাংলাদেশ কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সেবাগ্রহীতা ও অংশীজনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।

১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি বিশ্ব কাস্টমস সংস্থা (WCO) আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সংস্থাটি আধুনিক ও সহজতর উপায়ে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে এর সদস্যভুক্ত দেশেগুলোকে নেতৃত্ব, পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদানসহ বর্তমান ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। এ বছর কোভিড-১৯ সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারির প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত ১৮৩টি দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও সুসংহতকরণের লক্ষ্যে টেকসই সাপ্লাই চেইন এর ওপরে জোর দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বিশ্ব কাস্টমস সংস্থার এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য ‘Customs bolstering Recovery, Renewal and Resilience for a sustainable supply chain’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও শিল্পায়নের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেন। ফলে দেশে রাজস্ব আদায়ের বহুমুখী খাত সৃষ্টি হয়। জাতির পিতার সুযোগ্য নেতৃত্ব ও সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে মাত্র সাড়ে তিন বছরেই যু্দ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ রূপান্তরিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিন দফা সরকার গঠন করে সমগ্র দেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ‘কাস্টমস আইন, ১৯৬৯’ রহিত করার লক্ষ্যে যুগোপযোগী, সহজ, সমন্বিত ও সুসংহত নতুন কাস্টমস আইন, ২০২০ চূড়ান্ত করেছি। চলমান বৈশ্বিক মহামারিতে বাংলাদেশ কাস্টমসের সদস্যগণ ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা হিসেবে রাজস্ব আদায়, আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে সাপ্লাই চেইন নির্বিঘ্ন রাখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে। আমরা Customs Modernization Strategic Action Plan, ২০১৯-২০২২ গ্রহণ ও ব্যবসায়ীদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস প্রদানের লক্ষ্যে ৩৮টি ভিন্ন মন্ত্রণালয়/সংস্থার সমন্বিত সেবা কার্যক্রম ‘National Single Window’ বাস্তবায়ন শুরু করেছি।

চলমান এই মুজিববর্ষ আমি আশা করি, বাংলাদেশ কাস্টমস তাদের পেশাগত দক্ষতা ও সংস্কার বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে গতিশীলতা বৃদ্ধি, অপবাণিজ্য রোধ, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন প্রতিরোধ এবং সর্বোপরি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত করতে আরো সফল হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ইনশাআল্লাহ।

আমি ‘আন্তর্জাতিক কাস্টমস দিবস ২০২১’-এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”