দেশে আগরশিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মুঘল আমলে এ শিল্পের সুনাম ছিল বিশ্বজুড়ে। তবে বিভিন্ন নীতি-সহায়তার অভাবে থমকে গেছে শিল্পটি। যা পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্যোক্তারা বিসিক আগর শিল্পনগরী চান। পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে আগর উৎপাদনের ওপর প্রশিক্ষণ নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা।
শনিবার (১৬ জানুয়ারি) মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় আগরশিল্পের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এমন দাবি-দাওয়া উঠে এসেছে। অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে বেইজ লাইনের সার্ভে পরিচালনার মাধ্যমে প্রকল্পের কার্যক্রম নির্ধারণে বিসিক এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিকের পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) গোলাম মো. ফারুক। মতবিনিময় সভায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং আগরশিল্পের ৩০ জন অংশীজন উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগরশিল্পের অপার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে এ শিল্পের উন্নয়নের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে মৌলভীবাজারে আগরশিল্পের বিদ্যমান সমস্যার সমাধান ও এর বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এজন্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত বিসিক থেকে ‘আগরশিল্পের উন্নয়ন’ শিরোনামে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়।
পরবর্তীতে ডিপিপির ওপর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। পিইসি সভায় প্রস্তাবিত ডিপিপি পর্যালোচনা করে আগরশিল্পের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে একটি বেইজ লাইন সার্ভে পরিচালনার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
জানা গেছে, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর আগর-আতরের জন্য বিখ্যাত। বড়লেখার সুজানগর, পাথারিয়া ও নিউ সমনবাগ অঞ্চল আগর চাষের জন্য প্রসিদ্ধ। মুঘল আমলে বৃহত্তর সিলেটে আগরশিল্পের সুনাম ছিল বিশ্বজুড়ে।
আগর উড থেকে আহরিত তেল বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান সুগন্ধি। এই সুগন্ধির বিশেষ বৈশিষ্ট হলো- এটি অ্যালকোহলমুক্ত। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক আয়োজনে এ সুগন্ধির আকাশছোঁয়া চাহিদা বিশ্বজুড়ে। আগর উড থেকে তৈরি কাঠের টুকরা বা আগর তেল, আগর আতর উভয়ই সুগন্ধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া আগর তেল ছাড়া কাঠ বা পাউডারজাত সামগ্রী থেকে ধূপের মতো প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে আগরের সুবাস নেয়া হয়। আগর উডের নির্যাস সুগন্ধি সাবান, স্যাম্পুসহ অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রী তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।