ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বিষয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তাদের ব্যক্তিগত বিষয় বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নবনির্বাচিত কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই মির্জা আবদুল কাদের বিভিন্ন বক্তব্য দিচ্ছেন, এদিকে ঢাকায় দক্ষিণ সিটি মেয়র ফজলে নূর তাপস ও সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন, এতে দলীয় শৃঙ্খলায় কোনো ঘাটতি তৈরি হচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রথমতো মেয়র তাপসের বিষয়ে সাঈদ খোকন বক্তব্য দিয়েছেন এগুলো তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এখানে দলের কোনো কিছু নেই। আর নোয়াখালীতে মির্জা কাদের সাহেব যে বক্তব্য দিয়েছেন, আমাদের দলে এ রকম বক্তব্য বহু আগে অনেকেই দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দলে মুক্তভাবে কথা বলার অধিকার সবার আছে। তার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মির্জা কাদের সাহেবের বক্তব্য। কিন্তু আগের বক্তব্যগুলো এত প্রকাশ হয়নি। কারণ তখন যারা বক্তব্য দিয়েছে তারাতো দলে সাধারণ সম্পাদকের ভাই ছিল না। এখন যেহেতু সাধারণ সম্পাদকের ভাই বক্তব্য দিয়েছে এ জন্য এগুলো প্রতিদিন প্রচার পায়। এই হচ্ছে পার্থক্য। তবে তার বক্তব্যে এটা প্রকাশ পায় যে আমাদের দলে যে মনে খোলে কথা বলতে পারে সেটিরই বহিঃপ্রকাশ।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন ঘরে-বাইরে কারও নিরাপত্তা নেই, দেশে আইনের শাসন নেই- এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষের ওপর হামলা চালায়, জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে এবং প্রচণ্ড নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ফেলে, যাদের হাতে রক্ত লেগে আছে তারা যখন নিরাপত্তাহীনতার কথা বলে তখন মানুষ আতঙ্কিত হয়। আবার কোনো পেট্রলবোমা বাহিনী ধেয়ে আসছে কিনা। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে অনুরোধ জানাব- মানুষকে জিম্মি করার ও হামলা করার রাজনীতি বন্ধ করুন। যদি পরিসংখ্যান নেন দেখতে পারবেন তারা যখন ক্ষমতায় ছিল সে সময় যতটুকু জননিরাপত্তা ছিল আজ তার থেকে অনেক ভালো জননিরাপত্তা আছে বাংলাদেশে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর মধ্যে আজ তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস, এ বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। অর্থাৎ যে দিন স্বাধীনতা পূর্ণতা পেয়েছিল যেদিন স্বাধীনতার মহানায়কের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে। এই দিবসটিতেও তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। যা তারা যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে আদৌ বিশ্বাস করে কি না সেটা নিয়ে যে জনমনে প্রশ্ন আছে? সেটার উত্তর দিয়েছেন আজ বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়ে। অর্থাৎ তারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক্যাপিটল হিলে যে ঘটনাটি ঘটেছে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। যা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের জন্য কলঙ্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অত্যন্ত বন্ধুপ্রতিম ও উন্নয়ন সহযোগী দেশ। বাংলাদেশের উন্নয়নে তাদের অনেক ভূমিকা রয়েছে। আমরা আশা করব- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের যে যাত্রা সেটা অব্যাহত থাকবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মসিউর রহমান খান, সহ-সভাপতি ওসমান গণি বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক আরাফাত দাড়িয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, অর্থ সম্পাদক শাহ আলম নূর, দফতর সম্পাদক মো. জাফর ইকবাল, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক হালিম মোহাম্মদ, ক্রীড়া সম্পাদক মাকসুদা লিসা, আপ্যায়ন সম্পাদক মো. নঈমুদ্দীন, কার্যনির্বাহী সদস্য এম এম জসিম, আজিজুর রহমান, রুমানা জামান, মো. মাহবুবুর রহমান, রফিক রাফি, নার্গিস জুঁই ও জাহাঙ্গীর কিরণ।