মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বড় ধরনের ঝাঁকুনি খেয়েছে বিশ্ব অর্থনীতি। বাংলাদেশের অর্থনীতিও এর বাইরে নয়। দেশের আমদানি-রফতানি, শিল্প-কারখানা সব জায়গায় ছিল করোনার প্রভাব। ফলে অর্থবছর শেষে প্রত্যাশা অনুযায়ী অর্জিত হয়নি কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি। তবে রেমিট্যান্স, রিজার্ভ ও মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ কিছু ক্ষেত্রে সাফল্য আসলেও সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক সংকট নিয়েই শুরু হচ্ছে নতুন বছর।
দেশের অর্থনীতির চাঙ্গাভাব নিয়েই শুরু হয়েছিল ২০২০। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ায় মহামারি করোনাভাইরাস। গত মার্চ থেকে কয়েক ধাপে ৬৬ দিনের ছুটি ঘোষণা করে সরকার। সে সময় বন্ধ হয়ে যায় পোশাক কারখানাসহ সব ধরনের প্রতিষ্ঠান। বন্ধ ছিল আমদানি-রফতানিও। এতে সরকারের প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ থাকলেও অর্থবছর শেষে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে নতুন বছরে সরকারের হাতে যেসব প্রকল্প রয়েছে যেমন: গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং ‘আমার গ্রাম আমার শহর’— এগুলো অধীনে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বিভিন্ন খাতে কোন জায়গায় কতটা কাজের সুযোগ সৃষ্ট করা যায়, সেগুলোর একটা জরিপ চালিয়ে তার ভিত্তিতে সরকারের বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন।
বিদায়ী অর্থবছর নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জাগো নিউজকে বলেন, ‘করোনার কারণে বছরের শুরু আমরা যেমন অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকির মধ্যে ছিলাম, সেখান থেকে সরকারের কিছু উদ্যোগ কিছু ঝুঁকি এবং কিছু সৌভাগ্য সবকিছু মিলে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। তবে এখন পর্যন্ত যে স্থানে দাঁড়িয়ে আছি অন্যান্য দেশের বিচারে হয়ত আমাদের অবস্থান আশাব্যাঞ্জক। কোভিড পূর্ব সময়কালে আমাদের অর্থনীতির যে অবস্থান ছিলে তার চেয়ে এখনো অনেকটাই দুর্বল। ফলে সেই জায়গা থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে চালিকা শক্তি হতে পারে, সেটা হলো একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠী, যারা পূর্ণাঙ্গভাবে কাজে ফিরতে পারেনি, বেকার রয়েছেন। যারা কাজে যুক্ত রয়েছেন তারাও আসলে পূর্ণভাবে কর্মে নিয়োজিত নেই। আয়েরও কিছুটা অবনতি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবস্থা থেকে ফিরতে বড় যে চালিকাশক্তি থাকবে সেটা হলো রফতানি খাত কেমনভাবে ফিরে আসে আগামী মাসগুলোতে, সেটার একটা বড় চাহিদা থাকবে। আর অভ্যন্তরীণ বাজারে কীভাবে চাহিদা বৃদ্ধি পায় এবং তার মাধ্যমে কতটা বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায় আগামী মাসগুলোতে। আশঙ্কা রয়েছে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বা কর্মসংস্থান সহসাই অভ্যন্তরীণ বাজারমুখী খাতগুলো খুব সহসাই অনেক বৃদ্ধি পাবে সেটা মনে হচ্ছে না। সেদিক থেকে আগামী বছর সরকারকে সরকারি বিনিয়োগ করতে হবে কর্মসৃজনের জন্য। যাতে করে গ্রামাঞ্চল, শহরাঞ্চল এবং শহর উপশহরগুলোতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার মাধ্যমে যথেষ্ট মাত্রায় কাজ সৃষ্টি করা যায়, যাতে আপদকালীন ব্যবস্থা হিসাবে জনগণ যাতে কাজ পান এবং নিরাপত্তা থাকে তাদের।’
অর্জন হয়নি প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি
করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাইন ও মন্দার কারণে রফতানি কমে যায়। এদিকে করোনার বিস্তার রোধে দেশে ছুটির কারণে সব বন্ধ থাকায় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সাময়িক প্রাক্কলন অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ অর্জিত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, ২০২১ সালে অর্থনীতি কোভিড-১৯ প্রভাব থেকে ধীরে ধীরে বের হয়ে প্রবৃদ্ধির স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসবে। অন্তর্নিহিত কাঠামোগত অসামঞ্জ্যস্যজনিত কারণে বর্তমান মহামন্দার সৃষ্টি হয়নি, বরং এটি এসেছে ভাইরাস প্রতিরোধে দেশে দেশে আরোপিত লকডাউন এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়ার কারণে। বর্তমান সরকারের প্রণোদনা কার্যক্রম আগামিতে দেশের অর্থনীতির দ্রুত পুনর্গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এবং অর্থনীতি তার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে বলেও মনে করছে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন পোশাক খাত
করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য খাতের মতো দেশের পোশাক খাতও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। লকডাউনের কারণে পোশাক কারখানা বন্ধসহ, বিদেশি অর্ডার বাতিলের কারণে বিপাকে পড়েন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। ফলে চাকরি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয় শ্রমিকদের। এমন পরিস্থিতিতে করোনায় রফতানি খাতে সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণ প্যাকেজ থেকে এপ্রিল-জুনে ৩৫ লাখ পোশাক কর্মীকে বেতন দেয়া হয়। অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি বাজেট থেকে এ সহায়তা প্রদান করে। তবে শর্ত ছিল এ ঋণ ১৮ মাসে পরিশোধ করতে হবে। আর এর গ্রেস পিরিয়ড হবে ৬ মাস। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রসঙ্গে তুলে ধরে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক উৎপাদক ও রফতানিকারকদের সংগঠন- বিজিএমইএ এ ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ১৮ মাস থেকে বাড়িয়ে ৫ বছর এবং গ্রেস পিরিয়ড ৬ মাস থেকে বাড়িয়ে ১২ মাস করার প্রস্তাব দিয়েছে।
এদিকে প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং নতুন সহায়তা শিল্পের জন্য অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় এবার একই সময়ে রফতানি হ্রাস পেয়েছে ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। আর ২০ নভেম্বর পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে ৬ শতাংশ, যা এই শিল্পের জন্য আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় প্রণোদনা প্যাকেজের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং প্রয়োজনে নতুন সহায়তা প্রদান শিল্পের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি
২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে মাথাপিছু আয় দুই হাজার ৬৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর আগের অর্থবছরে মাথাপিছু গড় আয় ছিল এক হাজার ৯০৯ ডলার। অর্থাৎ দেশের মানুষের মাথাপিছু গড় আয় এক বছরের ব্যবধানে ১৫৫ ডলার বেড়েছে।২০০৫-০৬ অর্থবছর হতে মাথাপিছু আয় বেড়েছে তিনগুণেরও বেশি।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের হিসাবমতে, ক্রয় ক্ষমতা সাম্যের ভিত্তিতে বর্তমান মূল্যে মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালের ১ হাজার ৯৮০ মার্কিন হতে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৩৬৪ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রত্যাশা, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় ৫ হাজার ডলারে উন্নীত করা।
রফতানি খাতে করোনার ধাক্কা
করোনাভাইরাসে অন্যান্য খাতের মতো রফতানি খাতেও ছিল বড় ধরনের প্রভাব। চলতি বছরের নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় দেশের রফতানি আয় কমেছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, গত বছরের নভেম্বরের চেয়ে রফতানি আয় সামান্য (০.৭৬ শতাংশ) বেড়েছে। গত বছরের নভেম্বরে রফতানির পরিমাণ ছিল ৩০৫ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকার।
ইপির তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছে প্রায় ১ শতাংশ (০.৯৩ শতাংশ)। গত পাঁচ মাসে বাংলাদেশ বিশ্ববাজারে মোট রফতানি করেছে এক হাজার ৫৯২ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রফতানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৫৭৭ কোটি ৭১ লাখ ডলারের পণ্য।
বেড়েছে আমদানি ব্যয়
সরকারের আমাদানি নীতি বাস্তবায়ন, প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক খাত যেমন: বিদ্যুৎ, পরিবহন, ও যোগাযোগ ইত্যাদিতে অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমদানি ব্যয় ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রফতানির মতো আমদানি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে উঠানামা লক্ষ্য করা গেছে।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে আমদানির পরিমাণ ছিল ২২ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং তা ২ দশমিক ৭ গুণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দাঁড়ায় ৫৯ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি প্রবৃদ্ধির হার ২৫.৩ শতাংশ ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তা কিছুটা কমে যায় এবং করোনার প্রভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধ অর্জিত হয়। ফলে সেসময় আমদানির পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৫৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর সময়ে আমদানির ক্ষেত্র ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে ১১ দশমিক ৪৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড
মহামারির মধ্যেও রেমিট্যান্স পাঠিয়ে রেকর্ড গড়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে প্রবাসীরা দেশে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে কোনো একক মাসে এত রেমিট্যান্স কখনও আসেনি। আর নভেম্বরে তারা ২০৭ কোটি ৮৭ লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৭ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।
চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৯০ কোটি ৪৪ লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯২ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা)। রেমিট্যান্সের প্রবাহ চাঙ্গা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
এর আগে প্রবাসীদের উৎসাহ দিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। গত ১ জুলাই থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠালে প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ২ টাকা প্রণোদনা পাচ্ছেন প্রবাসীরা। এর ফলে করোনার মধ্যেও রেকর্ড গড়ছে রেমিট্যান্স।
একই সঙ্গে করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে মন্দা কাটাতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ৫ হাজার ডলার বা প্রায় ৫ লাখ টাকা কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়া ২ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। আগে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো যাচাই-বাছাই ছাড়া নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছিল।
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ
দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে প্রায় এক দশমিক ২২ লাখ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকার।
মোট ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে প্যাকেজ-১ এ ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল-সুবিধা দেয়া, ব্যাংক-ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল দেয়ার লক্ষ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণসুবিধা প্রণয়ন করা। প্যাকেজ-২ ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদান, ব্যাংক-ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বল্প সুদে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল প্রদানের লক্ষ্যে ২০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণসুবিধা প্রণয়ন করা।
প্যাকেজ-৩ এ বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের (ইডিএফ) সুবিধা বাড়ানো, ব্লক টু ব্লক এলসির আওতায় কাঁচামাল আমদানি সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ইডিএফের বর্তমান আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। ফলে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অতিরিক্ত ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ইডিএফ তহবিলে যুক্ত হবে।
প্যাকেজ-৪ এ প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম নামে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার একটি নতুন ঋণসুবিধা চালু করবে। এ ঋণসুবিধার সুদের হার হবে ৭ শতাংশ। প্যাকেজ-৫ এ রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি আপদকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
রিজার্ভ বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রফতানি ও প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে উচ্চ প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরিতে সহায়তা করেছে। বিগত ২০১৯-২০ অর্থবছরে করোনার প্রভাবে রফতানি ও আমদানির ক্ষেত্রের ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হলেও রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় এবং একাধিক দাতা সংস্থার কাছ থেকে বাজেট সহায়তা প্রাপ্তির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সর্বশেষ বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ ৪৩ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এদিকে স্থিতিশীল রয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রার সঙ্গে বাংলাদেশি টাকার বিনিময় হার। এর মধ্যে প্রধান আন্তর্জাতিক মুদ্রা মার্কিন ডলারের বিপরীতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিনিময় হার ছিল ৮৪ টাকা ৭ পয়সা।