আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবং বন্যার পানি দেরিতে নামার কারণে আলু চাষে বিলম্ব হলেও বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে আলু চাষে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠে কাজ করছেন চাঁদপুরের কৃষকরা। আর তাই হিমাগার থেকে বীজ উত্তোলন, জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ এবং প্রস্তুতকৃত জমিতে আলু রোপণের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন তারা।
বন্যার পানি জমি থেকে নামতে দেরি হওয়ায় প্রথমে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আলু রোপণ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। অপরদিকে, উঁচু জমিগুলো অনেকেই আলু রোপণের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ করেছেন।
তবে চলতি মৌসুমে ব্যাপক প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে চাঁদপুরের চাষিদের মাঝে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি বলে জানালেন কৃষকরা। কিন্তু অন্যান্য জেলার তুলনায় পিছিয়ে পড়ায় কিছুটা হতাশ কৃষকরাও।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার বিভিন্ন স্থানে বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে কৃষকরা এখন জমি চাষ, সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার করছেন। আবার অনেকেই প্রস্তুতকৃত জমিতে আলুর বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এছাড়াও পরিবারের ছোট বড় সবাই মিলে আনন্দঘন পরিবেশে একত্রিত হয়ে মাঠে আলু চাষের কাজ করছে। স্কুল বন্ধ থাকায় পরিবারের শিশু সদস্যরাও যোগ দিয়েছে তাদের সাথে। এতে অনেকটাই উপকৃত হচ্ছেন কৃষক। বেঁচে যাচ্ছে শ্রমিক খরচ।
জেলা সদরের শাহ মাহমুদপুর ইউনিয়নের আলু চাষি নেওয়াজ বেপারী বলেন ‘আমার দেড় বিঘা উঁচু জমিতে আলুর বীজ রোপণ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলুর ফলন গত বছরের ন্যায় এবছরও ভালো হওয়ার আশা করছি।’
মহামায়া ঘোষেরহাট এলাকার কৃষক জুলহাস গাজী বলেন, আমার তিন বিঘা জমিতে আলু রোপণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। দুই-একদিনের মধ্যে জমিতে আলু রোপণ করবো। লোকবল সংকট থাকায় একটু দেরি হয়ে গেল।
আবার কয়েকজন কৃষক জানালেন তাদের শঙ্কা, তারা জানান গত বছর আলুর বাজার একটু ভালো ছিল তাই এবছর অনেকেই আলু চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কিন্তু ভয় হলো চাষ বেশি হলে আবার না আলুর দাম কমে যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার জানান, এবার বৃষ্টির পানি নামতে দেরি হওয়ায় আলুর জমি প্রস্তুত করতে সময় লাগছে। জমি তৈরি, সার প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
জেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নরেশ চন্দ্র দাস জানায়, জেলায় এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে।
কৃষি বিভাগ এই জমি থেকে আলু উৎপাদনের আশা করছেন ১ লাখ ৭৬ হাজার মেট্রিক টন। আলু চাষে এখন পর্যন্ত অর্জনকৃত জমির পরিমাণ ৮ হাজার হেক্টর। এছাড়া চাষবাদ দেরিতে শুরু হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শতভাগ আশাবাদী তিনি।