আমাদের দেশের শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো ফুলকপি। ফুলকপির চাহিদা বাজারে ব্যাপক। তাই কৃষক প্রচুর ফুলকপি চাষ করে। কিন্তু বাজারে আমরা প্রায়ই দেখি ফুলকপির ফুল বাদামি গোলাকৃতি দাগযুক্ত, যা ফুলকপির কার্ড পচা রোগ নামেও পরিচিত।

এ রোগ ফিউজেরিয়াম ইকোইজিটি ও অলটারনেরিয়া প্রজাতির ছত্রাক এবং আরউইনিয়া কেরোটোভোরা নামক ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে সৃষ্ট।

এ রোগের আক্রমণের কারণে ফুলকপির সম্পূর্ণ ফুল নষ্ট হয়ে যায় বা খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়। আসুন জেনে নিই ফুলকপির কার্ড রোগের লক্ষণ ও প্রতিকারসমূহ।

রোগের লক্ষণ: ফুলকপির কার্ডে বা ফুলে প্রথমে বাদামি রঙের গোলাকৃতি দাগ দেখা যায়। পরে একাধিক দাগ মিশে বড় দাগ তৈরি করে। ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে কার্ডে দ্রুত পচন ধরে এবং ফুল নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্ত কার্ড বা মাথা থেকে খুব কম পুষ্পমুঞ্জরি বের হয় এবং তা খাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।

রোগের প্রতিকার: এ রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচতে প্রথমে সুস্থ গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে হবে। প্রতি কেজি বীজে ২.৫ গ্রাম প্রোভ্যাক্স বা কাবেন্ডাজিম দিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

ইপ্রোডিয়ন এবং কার্বেন্ডাজিম ছত্রাক নাশক প্রতিটি আলাদা ভাবে ০.২ % হারে মিশে ১২-১৫ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে। ওষুধ প্রয়োগের পাঁচদিন পর্যন্ত ফসল তোলা যাবে না। প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি অফিসে কৃষিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

ফুলকপি চাষের একই জমিতে বার বার কপিজাতীয় ফসল চাষ করা যাবে না। আক্রান্ত খেত থেকে বীজ সংগ্রহ করা যাবে না। লাল মাটি বা অম্লীয় মাটির ক্ষেত্রে শতাংশপ্রতি চার কেজি হারে ডলোচুন প্রতি তিন বছরে একবার প্রয়োগ করতে হবে।

লেখক: ডিপ্লোমা কৃষিবিদ ও উদ্যোক্তা: সম্পাদক, চাষী সেবা ডট কম