দুই মাসেরও বেশি সময় পার হওয়ার পর আদালতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করবে পুলিশ।

সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে অভিযোগপত্র দাখিলের কথা রয়েছে। সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (গণমাধ্যম) আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার (ওসি তদন্ত) পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য এটি দাখিল করবেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে আলোচিত এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূ ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার ওসি তদন্ত ইন্দ্রনীল। পুলিশ ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার পর পরই দ্রুত অভিযোগপত্র প্রস্তুত করেছে।

কয়জনকে অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এরআগে, গত কয়েকদিন পূর্বে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পেয়েছে পুলিশ। রিপোর্টে চার জনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। অন্যরা ধর্ষণে সহযোগিতা করেছে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। প্রাপ্ত ডিএনএ রিপোর্টে জানা যায় সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান রনি ও অর্জুন লস্কর ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে।

পুলিশ জানায়, সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় আট আসামি ছাত্রলীগের সাইফুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, অর্জুন লস্কর, রবিউল ইসলাম, মাইফুজুর রহমান মাসুম, রাজন ও আইনুলকে গ্রেফতারের পর পর্যায়ক্রমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

উপ-পুলিশ কমিশনার আরো জানান, রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয় তারা। জবানবন্দিতে প্রধান আসামি সাইফুর, তারেক, শাহ মাহবুবুর ও অর্জুন লস্কর ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। এছাড়া রবিউল ও মাহফুজুর ধর্ষণে সহায়তা করার কথা আদালতে স্বীকার করে।

উল্লেখ্য, গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে এক গৃহবধূ ধর্ষণের শিকার হন। জোরপূর্বক তাকে ছাত্রাবাসের ভেতরে প্রাইভেটকারে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের কর্মীরা। এ সময় তার স্বামীকে আটকে রেখে গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় মহানগর পুলিশের শাহপরাণ থানায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

এ মামলায় আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। পুলিশ ও র‌্যাব ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ আটজনকে গ্রেফতার করে। ১ ও ৩ অক্টোবর আট আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয় ঢাকার ল্যাবে। ডিএনএর পরীক্ষার প্রতিবেদন গত রোববার তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে পৌঁছায়