নওগাঁয় বাজারগুলোতে শীতকালীন শাকসবজিতে ভরে গেছে, কমেছে দামও। প্রথম দিকে দাম কিছুটা বেশি হলেও এখন সবজির সরবরাহ বাড়ার সাথে সাথে দামও কমতে শুরু করেছে। সবজি বিক্রেতারা বলছেন, শীত যত বাড়বে সরবরাহও তত বাড়বে আর কমবে দামও।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) নওগাঁ পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রথম দিকে ফুলকপি প্রতি পিস ৪০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে শিমের দাম ছিল ৫০ টাকা কেজি। এখন সেই শিমের কেজি ৩০ টাকায় নেমে এসেছে। গাজর ছিল ৬০ থেকে ৬৫ এখন ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। করলা ছিল ৬০ টাকা, এখন পাওয়া যাচ্ছে ৪০ টাকায়। লাউ প্রতি পিস ছিল ৩০ টাকা, এখন ২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। মুলা ছিল ১০ টাকা কেজি, এখন ৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পালং শাক ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও এখন ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে নতুন আলু ছিল প্রতি কেজি ১৫০ টাকা। এখন তা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকার ধনেপাতা এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে, পাতা পেঁয়াজ ছিল ৩০ টাকা এখন ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

তবে দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচের। এক সপ্তাহ আগেও যে মরিচ ছিল ৬০ টাকা কেজি, আজ সকালে তা বিক্রি হয়েছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজিতে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার আগাম শীতের সবজি বাজারে কিছুটা বেশি আমদানি হওয়ায় দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে। তারপরও বিক্রি অনেক কম হচ্ছে। শীতের সবজির সরবরাহ যত বাড়বে দাম আরও কমবে বলেও জানান তারা।

নওগাঁ জেলায় চলতি শীত মৌসুমে মোট ৭ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে শাকসবজির আবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। সূত্র মোতাবেক এ বছর শাকসবজির আবাদ ভালো হয়েছে। একদিকে কৃষকরা যেমন ভালো দাম পাচ্ছেন অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার নাগালের মধ্যেই রয়েছে।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) শামীম ইকবাল জানান, চলতি মৌসুমে কৃষকরা শীতকালীন সবজির মধ্যে বেগুন, ফুলকপি, বাঁধা কপি, শিম, লালশাক, পালং শাক, মুলা, বরবটি, গাজর, টমেটো, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, করলা ইত্যাদি আবাদ করেছেন।

উপজেলা ভিত্তিক শীতকালীন শাকসবজির আবাদ এবং উৎপাদনের পরিমাণ হচ্ছে নওগাঁ সদর উপজেলায় ১ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে, রানীনগর উপজেলায় ২১৫ হেক্টর জমিতে, আত্রাই উপজেলায় ৩৫৪ হেক্টর জমিতে, বদলগাছি উপজেলায় ৮৯০ হেক্টর জমিতে, মহাদেবপুর উপজেলায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে, পত্নীতলা উপজেলায় ৮৯৫ হেক্টর জমিতে, ধামইরহাট উপজেলায় ৮২২ হেক্টর জমিতে, সাপাহার উপজেলায় ৩৮৫ হেক্টর জমিতে, পোরশা উপজেলায় ৩৭৭ হেক্টর জমিতে, মান্দা উপজেলায় ১ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে এবং নিয়ামতপুর উপজেলায় ৬৫২ হেক্টর জমিতে শাকসবজি উৎপাদিত হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।