নগরীর ধোলাই পাড় চত্বরে স্বাধীন বাংলার স্থপতি, রাষ্ট্র পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য তৈরি করার পরিকল্পনা করে আসছে ক্ষমতাসীন দল। এরই প্রেক্ষিতে শুরু হয় ইসলামি দলগুলোর ভাস্কর্য তৈরির প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ সমাবেশ। গত ১৩ নভেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরির তীব্র সমালোচনা করেন খেলাফত মজলিশের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক । ভাস্কর্য নির্মাণের পদক্ষেপ থেকে না সরলে শাপলা চত্বরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাবে বলেও হুঁশিয়ার করেন সরকারকে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে নানান বিষ্ফোরক মন্তব্যে উত্তপ্ত দেশের রাজনৈতিক মহল। সম্প্রতি ভাস্কর্য নিয়ে ইসলামি সংগঠনগুলোর নেতারা বক্তব্য দিলেও নিরব ছিল আওয়ামী লীগ। তবে গতকাল শনিবার এ বিষয়ে কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফসহ শীর্ষ নেতারা। এ সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে অপব্যাখ্যা মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সাংঘর্ষিক। একটি কুচক্রি মহল স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ভাস্কর্য নিয়ে ভুল তথ্য দিয়ে ধর্মপ্রিয় জনগনের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করা যাচ্ছে। জনতার শান্তি নষ্টের যেকোনো অপচেষ্টা জনতাই রুখে দিবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও রাষ্ট্রবিরোধী কোনো বক্তব্যই সহ্য করা হবে না।

দলীয় নেতাকর্মীরা ভাস্কর্যের পক্ষ নিয়ে বললেও আজ থেকে মাঠে নামছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সহযোগী সংগঠন। জাতীর পিতার ভাস্কর্য নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদে আজ সারাদেশে মানববন্ধন পালন করবে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। জানা যায়, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনগুলোও পালন করবে কর্মসূচি। অবশ্য এর আগে মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন ছাড়া ছাড়াভাবে পালন করে নানা কর্মসূচি। শনিবার বিকালে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা আগামী ১ ডিসেম্বর সারাদেশে একযোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়।

এদিকে গত শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ থেকে হেফাজতে ইসলামসহ বেশ কয়েকটি ইসলামী দল বের করে বিক্ষোভ মিছিল যা পুলিশ ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আলেমদের এক সভায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, ঢাকা মসজিদের নগরী একে মূর্তির নগরী বানাতে দেওয়া হবে না। সরকার যদি ভাস্কর্য নির্মাণের সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তাহলে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি আরও বলেন, ভাস্কর্য নির্মাণবিরোধী ঈমানি আন্দোলনের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে একটি মহল। দেওয়া হচ্ছে আপত্তিকর বক্তব্য। এই অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে এবং ইসলামবিরোধী মানবভাস্কর্য তৈরির থেকেও সরে আসতে হবে।