শাশুড়ির দায়েরকৃত শতকোটি টাকা আত্মসাত মামলায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ সদস্য আনোয়ার হোসেন রানা এবং তার স্ত্রীর জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (২৫ অক্টোবর) বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রানাকে কারাগারে নেয়ার নির্দেশ দেন।

আদালত পরিদর্শক আম্বিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, টাকা আত্মসাতের মামলায় উচ্চ আদালতে থেকে জামিনে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য রানা।

রোববার বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য আসেন তিনি। তবে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রবিউল আওয়াল তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ১ অক্টোবর রানার বিরুদ্ধে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তোলেন তার শাশুড়ি। এই অভিযোগ করে বগুড়া সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগটি করেন আনোয়ার হোসেন রানার শাশুড়ি দেলওয়ারা বেগম। অভিযোগে রানার স্ত্রী আকিলা সরিফা সুলতানা খানম আঞ্জুয়ারাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন রানা নন্দীগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। তার বাবার নাম সামছুল হক।

ভুক্তভোগী দেলওয়ারা বেগম বগুড়া সদরের কাটনারপাড়া এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মৃত শেখ সরিফ উদ্দিনের স্ত্রী।

অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বামীর মৃত্যুর পর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে স্বামীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শরিফ বিড়ি ফ্যাক্টরি পরিচালনা করছিলেন দেলোয়ারা বেগম। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে ছিলেন তার পাঁচ মেয়ে আকিলা শরিফা সুলতানা, মাহবুবা শরিফা সুলতানা, নাদিরা শরিফা সুলতানা, কানিজ ফাতিমা ও তৌহিদা শরিফা সুলতানা।

অংশীদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তারা শহরের শাকপালা ও চারমাথা এলাকায় শরিফ সিএনজি লিমিটেড নামের দুটি ফিলিং স্টেশন এবং নবাববাড়ি রোডে দেলওয়ারা-শেখ শরিফ উদ্দিন সুপার মার্কেট পরিচালনা করে আসছিলেন।

শারীরিক অসুস্থতা ও বার্ধক্যজনিত কারণে জামাই আনোয়ার হোসেন রানা ও মেয়ে আকিলা সরিফা সুলতানাকে ব্যবসা দেখাশোনার মৌখিক অনুমতি দেন দেলোয়ারা বেগম। পরে একপর্যায়ে আনোয়ার হোসেন রানা দেলোয়ারা বেগমকে জিম্মি করে ফাঁকা স্ট্যাম্প, ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক চেক ও এফডিআরসহ বিভিন্ন নথিপত্রে তার স্বাক্ষর নেন।

এছাড়াও তার নিজের নামীয় ব্যাংক একাউন্ট থেকে নগদ টাকাসহ এফডিআর ভাঙিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকারও বেশি তুলে নেন অভিযুক্ত রানা। ২০১৫ সালের ১ জুন থেকে এই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই অর্থ তুলে আত্মসাৎ করেছেন দেলোয়ারা বেগমের মেয়ে ও জামাই। এরই বাইরে একই সময়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তার নামীয় ব্যাংক হিসাব থেকে আরও ৫০ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করে তারা।