পেঁয়াজ আমদানিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হওয়ায় টানা ১১ দিন ধরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। ফলে বেনাপোলে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর এলাকায় বিভিন্ন বেসরকারি পার্কিং আর সড়কে প্রায় শতাধিক পেঁয়াজ বোঝায় ট্রাক এখনো দাঁড়িয়ে আছে। দ্রুত এসব ট্রাক ছাড় করাতে না পারলে আবারো নতুন করে ক্ষতির শিকার হবেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে বাংলাদেশি আমদানিকারকেরা তাদের ভারতীয় রফতানিকারক প্রতিনিধিদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পুরানো এলসির আটকে পড়া পেঁয়াজ ছাড় করনে বার বার আবেদন জানালেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি। ফলে দেশে পেঁয়াজ আমদানি অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজ সংকট দেখা দেওয়ায় দাম আবারও বেড়ে চলেছে। বৃহস্পতিবার সকালে পাইকারি বাজারে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা আর খুচরা বাজারে তা ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আমদানিকৃত পেঁয়াজ অর্ধেক নষ্ট হওয়ায় বাজারে দাম বেড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
পেয়াজ আমদানিকারক শেখ ট্রেডার্সের শেখ মাহাবুব বলেন, প্রতিবছর পেঁয়াজ নিয়ে লংকা কাণ্ড হয়। ভারত কখনো উৎপাদন সংকট আবার কখনো রফতানি মূল্য তিন গুন বাড়িয়ে আমদানি বন্ধ করতে বাধ্য করে তারা। এক্ষেত্রে সংকট মোকাবেলায় ভারত ছাড়াও বাইরের কিছু দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের আহবান জানান সরকারের প্রতি।
বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সভাপতি মহাসিন মিলন বলেন, তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে এ পথে আমদানি অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক রফিকুল ইসলাম রয়েল, বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের ওপারের বিভিন্ন পার্কিংয়ে হেফাজতে তাদের প্রায় শতাধিক প্রায় পেঁয়াজ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ট্রাকের পেঁয়াজে পচন ধরেছে। নিষেধাজ্ঞার আগেই এসব ট্রাক বন্দর এলাকায় পৌঁছে ছিল।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক(ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই সংকট দেখিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এ পর্যন্ত কোনো পেঁয়াজের ট্রাক দেয়নি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। দিবে কিনা তাও নিশ্চিত জানাতে পারেনি।
উল্লেখ্য গত ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০ দিনে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৫৪৪ ট্রাক বিভিন্ন ধরনের পণ্য । তবে এসব পণ্যের মধ্যে কোনো পেঁয়াজের ট্রাক ছিল না। একই সময়ে ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রফতানি হয়েছে ১০২৭ ট্রাক পণ্য। তবে এসব রফতানি পণ্যের মধ্যে ৬৭ ট্রাক ছিল পদ্মার ইলিশ।