অবৈধ বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড, ব্যানারের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। যেখানে যে বিলবোর্ডের ট্যাক্স পরিশোধ করা হয়নি, সেগুলো বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা থেকে রাজধানীর গুলশান-২ গোল চত্বর থেকে শুরু হয় এই অভিযান। মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযানের শুরুতেই আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের ২১৬০ বর্গফুট ও ২১৬ বর্গফুটের দুটি বিলবোর্ড ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।

উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এই শহরে ব্যবসা করার অধিকার সবারই আছে। কিন্তু ব্যবসা করতে হলে নিয়ম-নীতি মেনে করতে হবে। অনেকেই ভেবেছিল এই শহরের অভিভাবক নেই, কিন্তু অভিভাবক আছে। এই শহরের অভিভাবক হলো সিটি করপোরেশন। আপনারা যে যত বড় শক্তিশালীই হোন না কেন অনুমোদন নিয়ে ব্যবসা করেন।

তিনি বলেন, যত বড় কোম্পানিই হোক না কেন ট্যাক্স না দিয়ে কোনো বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড ব্যবহার করতে পারবে না, এটা হলো পরিষ্কার কথা। অভিযানে এসে দেখছি অনেকে কাগজ নিয়ে আমাদের দেখাতে চাচ্ছেন, তাদের বৈধতা আছে। কিন্তু তাদের কারো কারো ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ট্যাক্স পরিশোধ থাকলেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের ট্যাক্স দেয়নি। তারা ভেবেছিল না দিয়ে কাউকে ম্যানেজ করা যায় কিনা, তাদের উদ্দেশে আমার পরিষ্কার কথা- ম্যানেজের দিন শেষ। এখন হচ্ছে ট্যাক্স দিন মিষ্টি খান, ট্যাক্স দেবেন না জরিমানা খাবেন।

বিভিন্ন সময়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে রাস্তার পাশে কনস্ট্রাকশন কাজে ব্যবহৃত মূল্যবান রড উত্তর সিটি কর্পোরেশন নিয়ে যাচ্ছে এবং পরে নিলামে বিক্রি করে দিচ্ছে। এ সময় বাড়ির মালিকরা সময় চাওয়াতে মেয়র বলেন: রাস্তা কি আপনার বাবার, এই শহরের অভিভাবক আমি, নিয়ম মেনে কাজ না করলে জরিমানা। নিয়ম না মেনে কেউ কোন কাজ পারবে না। নিয়ম কানুন মেনে চলুন কাজ করুন, আমাদের কোন সমস্যা নেই। আমরা সার্বিক সাহায্য করবো।

সকল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, আপনারা ব্যবসা করবেন ভালো কথা, যেকোনো কিছু করার আগে সিটি করপোরেশনের অনুমতি আছে কিনা তা যাচাই করে নিন। একটা শহর অপরিকল্পিতভাবে গড়তে গড়তে নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। এটা তো হতে পারে না। যারা বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড ব্যবহার করবেন, আপনাদের জানা দরকার, এর জন্য আমাদের কাছে আবেদন করতে একটি টেকনিক্যাল কমিটি আছে। যে কমিটিতে নগরপরিকল্পনাবিদ, স্থপতিরা রয়েছেন। তারা দেখবেন কোন এলাকায় কতটুকু বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড বসানো যায়, কোনটা দৃষ্টিকটু, কোনটা ভালো এসব বিবেচনা করে তারা মতামত দিলেই কেবল আমরা অনুমতি দেব। এভাবে আর যত্রতত্র বিলবোর্ড, সাইনবোর্ড স্থাপন করতে দেয়া হবে না।

তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর সকল সরকারি সংস্থার ট্যাক্সের ফাইল দেখেছি। আমরা প্রায় ৪৩টি সরকারি সংস্থার কাছে ৫৮ কোটি টাকার ট্যাক্স পাই। এরই মধ্যে ওই সকল সংস্থাতে আমরা চিঠি দিয়েছি, তাদের ট্যাক্স পরিশোধ করতে বলেছি।

অভিযানের সময় গুলশান-২ এর গোল চত্বরে জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার তাৎক্ষণিক ট্যাক্স জমা দেয়ায় তাকে মিষ্টি খাইয়ে দেন মেয়র। এসব তিনি বলেন, এভাবে যারা ট্যাক্স দেবেন তারা মিষ্টি খাবেন, আরা যারা ট্যাক্স দেবেন না তারা জরিমানা খাবেন।

অভিযানের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবদুল হামিদ মিয়াসহ বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা।