রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা ওয়াসা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মতো আমলা নির্ভর প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম ঘোর আপত্তি জানিয়েছেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিগণ। তাদের মতে আমলা নির্ভর এরকম প্রতিষ্ঠান না করে সিটি করপোরেশন, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভায় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতায়ন করা হোক। তাতে জনগণের কল্যাণ বয়ে আনবে। কেউ কেউ বলেছেন, রাজউকের ইট পর্যন্ত টাকা চায়, বিল্ডিংয়ের বালু পর্যন্ত টাকা চায়, ওয়াসায় টাকা ছাড়া কাজ হয় না। সেখানে নতুন করে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়া আরও সমন্বয়হীনতা বাড়বে।
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নামে একটি বিল পাসের আগে জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব উত্থাপন করে এসব কথা বলেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যগণ। তারা সকলেই জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা বাড়ানোর পক্ষে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বিল তো পাস হবে, পাস হলে তাতে কি হবে? আমরা কি সুন্দর নগরী পাব? অথবা আধুনিক সুসজ্জিত, কিন্তু তা তো আমরা পাব না। বিল পাস হওয়ার পর দেখা যাবে যে যেভাবে পারে ইচ্ছামতো কাজ করছে। এখানে দেখার তো কেউ থাকবে না। আমরা শুধু দিয়েই যাচ্ছি, কিন্তু দেখার তো কেউ নাই। গাজীপুরের অন্তবর্তী যে ভাওয়াল গড় আছে যেখানে শালবন কেটে কেটে পর্যটন নগরী করা হচ্ছে দেখার তো কেউ নেই। এভাবে অপরিকল্পিতভাবে নগর উন্নয়নের নামে যা করা হবে তাতে সাধারণ নাগরিক সুবিধা পাবে না। রাজউক আছে, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতেও আছে সেখানে কিন্তু নগর উন্নয়নের নামে যা হচ্ছে তা ভালো নয়।
ফখরুল ইমাম বলেন, সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদে বলা আছে প্রশাসনিক সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে জনগণের কল্যাণে কাজ করবে। গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে সেই সুযোগ নাই। এখানে একজন চেয়ারম্যান নিয়োগ করবেন। এর অভিজ্ঞতা তো ভালো না। তাই এটার দরকার আছে বলে মনে করি না।
মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, এই আইনে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান যিনি হবেন তিনি একজন আমলা অথবা নিয়োগপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তি। নির্বাচিত প্রতিনিধি না। সিটি করপোরেশনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখতে পাই বাংলাদেশের সিটি করপোরেশনের মেয়ররা অসহায়, কারণ তারা কাজ করতে পারেন না। দেখা যায় তারা রাস্তা করার পর সেখানে পানির লাইনের কাজ হচ্ছে নয়তো ড্রেন করছে, দেখা যায় বিদ্যুতের লাইন, গ্যাসের লাইন করছে সমন্বয়ের অভাব।
তিনি বলেন, রাজউকের দিকে তাকালে দেখা যায় যে রাজউকে গেলে বিল্ডিংয়ের ইট পর্যন্ত টাকা চায়। রাজউকের যে বালু সেটা পর্যন্ত টাকা চায়। ওয়াসাতে গেলে টাকা ছাড়া কাজ হয় না। যে রাজউকে ৯৬ সালে প্রকল্প নিয়েছিল পূর্বাচলে। যারা প্লট পেয়েছিলেন তারা মৃত্যু পথযাত্রী। তাদের ছেলে মেয়েরা বাড়ি করতে পারবেন কিনা জানি না। এই হল উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অবস্থা। এখন গাজীপুর যদি একই উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ হয় রাজউকের তাতে লাভ কি? আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল, আপনারা সিটি করপোরেশনের মেয়রদের ক্ষমতা জোরদার করে দায়িত্ব দেন।