টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর বলেন, টাকার নেশায় মরিয়া ওসি প্রদীপের মতো এমন পুলিশ কর্মকর্তা জীবনেও দেখিনি। ‘ক্রসফায়ারের’ নামে মানুষ খুন করা ছিল তার নেশা। টেকনাফ থেকে ওসি প্রদীপ ২০০ কোটি টাকার অধিক নিয়েছেন। টেকনাফ থানায় ওসি প্রদীপের ডানে-বামে থাকা পাঁচ-ছয়জন ও টেকনাফের স্থানীয় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই ওসি প্রদীপের ‘ক্রসফায়ার’ ও চাঁদাবাজির রোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসবে।

টেকনাফের গুদারবিল এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু ছৈয়দ এবং সাবরাংয়ের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আছারবনিয়ার ইউপি সদস্য শরিফ প্রকাশ শরিফ বলি ছিলেন ওসি প্রদীপের অপকর্মের সহযোগী। প্রদীপের টাকায় মিয়ানমার থেকে চোরাইপথে গরু এনে টেকনাফ হয়ে চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করা হতো। ভাগের টাকা চট্টগ্রামে বুঝে নিতেন প্রদীপের লোকজন। অধিকাংশ ‘ক্রসফায়ারের’ চাঁদাবাজির টাকাও এই দুই মেম্বারের হাতে যেতো। অন্য টাকা নিতেন প্রদীপের বডিগার্ড কনস্টেবল সাগর। এভাবে ‘বর্ণচোরার’ মতো চলেছে প্রদীপের ‘ক্রসফায়ার’ বাণিজ্য।

‘ক্রসফায়ারের’ ভয় দেখিয়ে আটক ব্যক্তির পরিবার থেকে লুটে নেয়া হতো স্বর্ণালঙ্কার। তা বিক্রি করা হতো চট্টগ্রামের স্বর্ণ মহাজন সজল ধরের কাছে। তার কাছে যেত লুণ্ঠিত সব ধরনের স্বর্ণালঙ্কার। প্রদীপের টেকনাফে স্থানীয় সহযোগীর মাঝে অন্যতম হিসেবে নাম এসেছে টেকনাফ কমিউনিটি পুলিশের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুরুল হোসাইনের। পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের ভয়ভীতি দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আদায় করতেন তিনি।

২৭ জুলাই সেন্টমার্টিন থেকে আটক মাছ ব্যবসায়ী জুবায়েরকে ‘ক্রসফায়ার’ থেকে বাঁচানোর কথা বলে দুই দফায় ১০ লাখ টাকা নেন নুরুল হোসাইন ও আবদুল কাইয়ুম নামে দুই ব্যক্তি। এরপরও জুবায়ের ছাড়া পাননি। অবশেষে তাকে মামলার আসামি করেন ওসি প্রদীপ। মামলায় জড়ানোর পর টাকা ফেরত পেতে সহযোগিতা চেয়ে টেকনাফের ইউএনও এবং বিশেষ এক গোয়েন্দা শাখার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন জুবায়েরের ভাই ইউনুস।