‘আমরা ঘাসের ছোট ছোট ফুল/ হাওয়াতে দোলাই মাথা,/ তুলো না মোদের দোলো না পায়ে/ ছিঁড়ো না নরম পাতা।/ শুধু দেখো আর খুশি হও মনে/ সূর্যের সাথে হাসির কিরণে/ কেমন আমরা হেসে উঠি আর/ দুলে দুলে নাড়ি মাথা।’ কবি জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের লেখা ‘ঘাসফুল’ কবিতাটি আমাদের দেশে প্রাথমিকের পাঠ্যতালিকাভুক্ত। বাংলাদেশের পথে-ঘাটে, মাঠে-প্রান্তরে অবহেলা আর অযন্তে ফুটে থাকে ঘাসফুল। তাদের সম্পর্কে সচেতন করতে, কষ্ট না দিতেই কবি লিখেছেন কবিতাটি। শৈশব থেকেই সবাই যেন প্রকৃতিকে ভালোবাসতে পারে।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা দুনিয়া। লকডাউন অবস্থা চলছে বিশ্বজুড়ে। বাংলাদেশে চলছে সাধারণ ছুটি। বন্ধ সব ধরনের গণপরিবহন। আমাদের দেশেও একরকম লকডাউন অবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে অবস্থান করছে। প্রত্যন্ত গ্রামে অতটা বিধি-নিষেধ পৌঁছেনি হয়তো। এই ভেবে ঘর থেকে বের হন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাসরিন হিমু। নোয়াখালী সদর উপজেলার চরম টুয়া একটি নয়নাভিরাম গ্রাম। এই গ্রামের পথে-প্রান্তরে দস্যিপনা করেই বেড়ে ওঠা তার।
ঘর থেকে বের হয়ে জনসমাগম এড়িয়ে হিমু দিগন্তজোড়া মাঠের পাশে ছায়ায় বসেন। নিজের চারপাশে অযন্তে ফুটে থাকা ঘাসফুল দেখে ভাবেন, অবহেলায় প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা এসব ফুলের সৌন্দর্যের কথা। মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকেন নাম না জানা ঘাসফুলের দিকে। নয়নজুড়ানো রূপ তার। বন্দি করেন মোবাইল ফোনের ক্যামেরায়। হঠাৎ অবহেলার এই ফুলের সঙ্গে দেশের লাখো পথশিশুর সূক্ষ্ম যোগসূত্র খুঁজে পান তিনি।