পেঁপে একটি স্বল্পমেয়াদী ফল বা সবজি। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু, পুষ্টিকর এবং ওষুধি গুণ সম্পন্ন। বাংলাদেশে পেঁপে খুবই জনপ্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁপে চাষ হয়। এর মোট উৎপাদন প্রায় ৪৯ হাজার টন। আজ রেড লেডি পেঁপে জাতের চাষ সম্পর্কে জেনে নিন-
বীজ সংগ্রহ: বীজ কেনার সময় ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে নিতে হবে। চীন ও তাইওয়ানের রেড লেডি বীজ অনেক ভালো।
দাম: তাইওয়ানের রেড লেডি ২ গ্রাম বীজের প্রতি প্যাকেট ৫৫০-৬৫০ টাকায় কিনতে পাওয়া যায়।
বীজের হার: প্রতিগ্রামে বীজের সংখ্যা ৬০-৭০টি। হেক্টরপ্রতি ৭০-১০০ গ্রাম বীজ দরকার। সে হিসেবে ৩ হাজার-৩ হাজার ২০০ চারা দিয়ে ১ হেক্টর জমিতে পেঁপে চারা লাগানো যায়।
চারা তৈরি: বীজ থেকে বংশ বিস্তার করা যায়। বীজের প্যাকেট কেটে ২ ঘণ্টা রোদে শুকিয়ে ঠান্ডা জায়গায় রেখে ১০-১২ ঘণ্টা পানিতে ভেজানোর পর পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করতে হবে। পলিথিন ব্যাগে চারা তৈরি করলে রোপণের পর চারা দ্রুত বাড়ে। ৫X৬ সে.মি আকারের ব্যাগে সমপরিমাণ বেলে দোআঁশ মাটি ও পচা গোবরের মিশ্রণ ভর্তি করে ব্যাগের তলায় ২-৩টি ছিদ্র করতে হবে। তারপর এতে সংগৃহীত বীজ হলে একটি এবং পুরাতন বীজ হলে ২টি বপন করতে হবে। ১টি ব্যাগে একের বেশি চারা রাখা উচিত নয়।
চারা রোপণ: ১.৫ থেকে ২ মাস বয়সের চারা রোপণ করা যায়। ২ মিটার দূরে দূরে ৬০X৬০X৬০ সে.মি আকারে গর্ত করে রোপণের ১৫ দিন আগে গর্তের মাটির সার মেশাতে হবে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ২ সারির মাঝখানে ৫০ সে.মি নালা রাখতে হবে।
সার: চারা লাগানোর পর নতুন পাতা এলে ইউরিয়া ও এমপি সার ৫০ গ্রাম করে প্রতি ১ মাস অন্তর প্রয়োগ করতে হবে। গাছে ফুল এলে এ মাত্রা দ্বিগুণ হবে। শেষ ফল সংগ্রহের আগেও সার দিতে হবে।
পরিচর্যা: গাছের গোড়া থেকে আগাছা তুলে ফেলতে হবে। গোড়ার মাটি কোদাল দিয়ে হালকা করে দিতে হবে। গাছে অতিরিক্ত ফল হলে কিছু ফল ছিড়ে নিতে হবে। বাকি ফল এতে বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। পেঁপে গাছে বিভিন্ন হরমোন প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যায়।
ফল সংগ্রহ: পুষ্ট হওয়ার সময় কোনো কোনো ফলে হলুদ রং ধারন করে। পুষ্ট ফলে কিছু দিয়ে খোঁচা দিলে পানির মতো তরল আঠা বের হবে। অপুষ্ট ফল থেকে দুধের মতো ঘন আঠা বের হবে।