বেশিরভাগ ফল গাছই দেশের সব জায়গায় কম-বেশি জন্মে। কারণ দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানের আবহাওয়ার পার্থক্য খুব বেশি নয়। আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান এবং মাটির গুণাবলী ফল গাছের ফল ধারণ, বৃদ্ধি এবং সংরক্ষণের বিষয়গুলোকে প্রভাবিত করে। আসুন জেনে নেই আবহাওয়া নির্ভর মাটির গুণাবলী সম্পর্কে—

গুণাবলী
সাধারণত উঁচু জমি ফল চাষের জন্য বেশি ভালো। দেশের বিভিন্ন স্থানের জমির গুণাবলীতেও অনেক পার্থক্য দেখা যায়। কোথাও মাটি লালচে, কোথাও কালচে, কোথাও বালি বেশি, কোথাও কর্দমাক্ত। কোথাও লবণের ভাগ বেশি, কোথাও অম্লমান বেশি। কোথাও কম নিষ্কাশিত, কোথাও সু-নিষ্কাশিত। পানির স্তর কম-বেশি হয়।

ঋতুচক্র
ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে আবহাওয়ার উপাদানগুলোর মধ্যে ঋতুচক্র একটি বিষয়। কারণ তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত ঋতুচক্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে ঋতুভেদে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

তাপমাত্রা
ফল গাছের বৃদ্ধি এবং ফল ধারণের জন্য তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। তাপমাত্রা কম-বেশি হলে ফল চাষে বিঘ্ন ঘটে। একই ফলের বিভিন্ন জাতের মধ্যেও তাপমাত্রার প্রয়োজন ভিন্ন ভিন্ন ধরনের হতে পারে।

বৃষ্টিপাত
সব ফল গাছের বৃষ্টিপাতের চাহিদা এক নয়। বৃষ্টিপাত কম-বেশি অনেক ফল গাছের ক্ষতি করে। গাছে ফুল ফোটার সময় বেশি বৃষ্টি হলে পরাগ রেণু ও গর্ভমুণ্ডের আঠালো রস ধুয়ে যায়। ফুলে কীট-পতঙ্গের আনাগোনা কমে যায়। ফলে নিষেকক্রিয়া ব্যাহত হয়ে ফল উৎপাদন হ্রাস পায়।

আলো
গাছের বৃদ্ধি, ফল উত্পাদন এবং গুণগতমান অক্ষুণ্ন রাখতে আলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবে বিভিন্ন ধরনের ফল গাছের জন্য আলোর চাহিদায় ভিন্নতা রয়েছে।

আর্দ্রতা
ফলের আকার, আকৃতি, রং, গুণগতমান বাতাসের আর্দ্রতার ওপর নির্ভর করে। কিছু ফল শুষ্ক আবহাওয়ায় এবং কিছু ফল আর্দ্র আবহাওয়ায় ভালো জন্মে।

গতিবেগ
ফল চাষের জন্য বাতাসের গতিবেগ গুরুত্বপূর্ণ। গতিবেগ বাড়লে গাছ এবং মাটির রস দ্রুত নিঃশেষ হয়। এজন্য ঘন ঘন পানি সেচের প্রয়োজন হয়। ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ে। তাছাড়া ঝড়ো বাতাসে ফল গাছের এবং ফলের অনেক ক্ষতি হয়।