কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। প্রচুর ভিটামিন থাকায় কাঁঠালের গুরুত্ব কম নয়। যদিও বিদেশি জাতের কাঁঠালে বাজার সয়লাব, তবুও কমেনি দেশীয় জাতের কাঁঠালের গুরুত্ব। দেশীয় জাতের কাঁঠাল অন্যান্য জাতের চেয়ে সুস্বাদু। বাড়ির আঙিনায় অন্য গাছ রোপণের পাশাপাশি দেশীয় জাতের কাঁঠাল পছন্দের তালিকায় রাখা হয়। এজন্য গ্রামের বাড়িগুলোর দিকে তাকালে এখনো কাঁঠাল গাছ দেখা যায়।
কাঁঠালের ওজন ১-৬ কেজি পর্যন্ত হয়। তবে বাড়ির আঙিনায় কাঁঠাল গাছের সংখ্যা আগের মতো চোখে পড়ে না। সংখ্যা যেন ক্রমেই কমে চলেছে। তবে নতুন বাড়ি নির্মাণের সময় কেউ কেউ কাঁঠালের বীজ রোপণ করে থাকেন। বিদেশি জাতের কাঁঠালের চেয়েও দেশীয় জাতের কাঁঠালের দাম বেশি। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় এর চাহিদা চোখে পড়ার মতোই।
জানা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলের বাড়িতে চাষ হওয়া কাঁঠাল বেশ সুস্বাদু হয়ে থাকে। কারণ উপকূলীয় অঞ্চলে পলিমাটি রয়েছে। ফলে এ মাটি কাঁঠাল উৎপাদনের জন্য বেশ উপযুক্ত। তাই এ অঞ্চলে কাঁঠালের ফলনও খুব ভালো হয়। প্রতিটি গাছে ৬-৩০টিরও বেশি কাঁঠাল ধরে। গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত কাঁঠাল ধরে।
তবে দেশের সব অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠালের উৎপাদন না হওয়ায় তেমন বিকাশ ঘটছে না। চাষিরাও প্রয়োজনীয় পরামর্শ পান না। নিজেদের প্রচেষ্টায় উৎপাদন করে আসছেন তারা। কীটপতঙ্গ নিধনে কেমন ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে, সে পরামর্শও মিলছে না। তাই কাঁঠালের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকের মাঝে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
বিভিন্ন বাজার সূত্রে জানা যায়, দেশীয় কাঁঠালের মান ভালো হলেও এ কাঁঠাল বাজারে তেমন পাওয়া যায় না। আমদানি করা কাঁঠালই অনেকের ভরসা। মৌসুমী এ ফলে প্রচুর পুষ্টিগুণ থাকায় সচেতন মানুষ এর উপকারিতা ভুলতে পারেন না। তবে একসাথে বেশি কাঁঠাল খেলে সমস্যাও হতে পারে। পরিমিত খেলে কোন সমস্যা হয় না।
কাঁঠাল কেবল পরিবারের চাহিদা মেটায় এমন নয়। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে জ্যৈষ্ঠ মাসে যে ফল দেওয়া হয়, তাতে কাঁঠালেরও একটা প্রভাব থাকে। যেন কাঁঠাল ছাড়া তা চলেই না। আর তাই তো কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল।
শুধু কাঁঠালই যে মানুষ খেতে পারে, তা কিন্তু নয়! কাঁঠালের বিচি রান্না করলে তরকারি হিসেবেও মন্দ নয়। আবার কেউ কেউ কাঁচা কাঁঠাল রান্না করে খান। কাঁঠালেরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রেসিপি। মোটকথা, জ্যৈষ্ঠ মাসে আমাদের দেশে কাঁঠালের গুরুত্ব অনেক।