রঙিন ফটোকপিয়ার ও সহজলভ্য মুদ্রণ প্রযুক্তির জন্য ব্যাংক নোট জাল করার অপ-তৎপরতা অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে। জাল নোটের কারবারিদের অপতত্পরতার খবর মাঝেমধ্যে পত্রিকার পাতায় ছাপা হয়। উৎসবের প্রাক্কালে এরা আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে।

হাটবাজারে এমনকি শপিং মলে কেনাকাটার ভিড়ে জালনোট গছিয়ে দেওয়া হয়। একশ, পাঁচশ ও এক হাজার টাকা মূল্যমানের নোট বেশি জাল হয়। গ্রাম-গঞ্জের সহজ, সরল ও নিরক্ষর মানুষ এদের মূল টার্গেট। তবে নকল নোট চেনার সহজ উপায় জানা থাকলে প্রতারণা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

১। নিরাপত্তা সুতা: ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রত্যেক প্রকার নোটেই মূল্যমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো সম্বলিত নিরাপত্তা সুতা রয়েছে। নোটের মূল্যমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো নিরাপত্তা সুতার ৪টি স্থানে মুদ্রিত আছে। নোট চিত করে ধরলে নিরাপত্তা সুতায় মূল্যমান লোগো দেখা যাবে। এ নিরাপত্তা সুতা অনেক মজবুত বা নোটের কাগজের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নখের আঁচড়ে বা মুচড়িয়ে উক্ত নিরাপত্তা সুতা কোনক্রমেই উঠানো সম্ভব নয়। জালনোটে নিরাপত্তা সুতা সহজেই নখের আঁচড়ে বা মুচড়ানোতে উঠে যাবে।

২। রঙ পরিবর্তনশীল কালি: ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রত্যেক প্রকার নোটের উপরের ডানদিকে কোনায় ইংরেজি সংখ্যায় লেখা নোটের মূল্যমান রঙ পরিবর্তনশীল কালিতে মুদ্রিত রয়েছে। ১০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের নোট আস্তে আস্তে নড়াচড়া করলে নোটের মূল্যমান লেখাটি সোনালী হতে ক্রমেই সবুজ রঙ এ পরিবর্তিত হয়। একইভাবে ৫০০ টাকা মূল্যমানের নোটে ৫০০ মূল্যমান লেখাটি লালচে হতে পরিবর্তিত হয়ে সবুজ হয়। জালনোটে ব্যবহৃত এ রঙ চকচক করলেও তা পরিবর্তিত হয়না।

৩। অসমতল ছাপা: ১০০, ৫০০, ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রত্যেক প্রকার নোটের সম্মুখ ও পশ্চাৎ পৃষ্ঠের ডিজাইন, মধ্যভাগের লেখা, নোটের মূল্যমান এবং ৭টি সমান্তরাল সরলরেখা উঁচু-নিচু (খসখসে) ভাবে মুদ্রিত আছে। তাছাড়া, নোটের ডানদিকে ১০০ টাকার নোটে ৩টি, ৫০০ টাকার নোটে ৪টি এবং ১০০০ টাকার নোটে ৫টি ছোট বৃত্তাকার ছাপ আছে যা হাতের স্পর্শে উঁচু-নিচু (খসখসে) অনুভূত হয়। এ সকল বৈশিষ্ট্য জালনোটে সংযোজন করা সম্ভব নয়।

৪। জলছাপ: ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকা মূল্যমানের প্রত্যেক প্রকার নোটে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নোটের মূল্যমান জলছাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মনোগ্রাম এবং নোটের মূল্যমান প্রতিকৃতির তুলনায় উজ্জ্বল দেখাবে।

এছাড়াও স্বল্পমূল্যেও বিভিন্ন ব্রান্ডের জালনোট সনাক্তকারী মেশিন (UV) এবং আতশি কাঁচ দ্বারা জাল নোট সহজে পরীক্ষা করা যায়।