বর্ষা মৌসুমে জামরুল বাজারের একটি সহজলভ্য ফল। দেশের প্রায় সব জায়গায়ই এটি পাওয়া যায়। তবে জামরুলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে আমাদের ধারণা কম। শরীরের পুষ্টি জোগাতে বেশি বেশি জামরুল চাষ করা দরকার। আসুন জেনে নেই জামরুল চাষের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মো. বিল্লাল হোসেন-

জামরুল চাষের সময়: দেশে প্রায় সারা বছরই জামরুলের চাষ করা যায়। তবে মে মাস থেকে জুলাই মাস জামরুল চাষের উপযুক্ত সময়। এ সময়ে গাছ লাগালে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

জামরুল চাষ পদ্ধতি: মে মাসের মধ্যেই মাটিতে গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে ভরতে হবে। সাথে কাঠের ছাই, হাঁড়ের গুঁড়া, টিএসপি, এমওপি এবং বোরণ সার মিশিয়ে দেবেন। এরপর উপযুক্ত চারাটি টবের মাটিতে প্রতিস্থাপন করতে হবে। তবে খেয়াল রাখবেন বেশি ঠান্ডা বা গরম উভয়ই জামরুল গাছের জন্য ক্ষতিকর।

কেন চাষ করবেন

হজম শক্তি বাড়াতে: জামরুলের উচ্চমাত্রার ফাইবার (খাদ্য আশ) হজমের জন্য দারুণ উপকারি। ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। তাছাড়া ফাইবার ক্ষুদ্রান্ত্রের ক্যান্সার প্রতিরোধেও কাজ করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে: এতে জাম্বোসাইন নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস রয়েছে, যা একধরনের ক্ষারজাতীয় উপাদান। এটি স্টার্চকে চিনিতে রূপান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। কাজেই জামরুল খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে যাবে না এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে: জামরুলে আছে ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে: পুষ্টি উপাদানের সম্মিলিত উপস্থিতি দেহের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে খুবই কার্যকরী। অ্যাথেরোসক্লেরোসিসের ঝুঁকিও কমে আসে উল্লেখযোগ্য হারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে: জামরুলের শক্তিশালী উপাদানগুলো জীবাণু এবং ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ত্বকে ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকায় এ ফল। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

সতর্কতা: জামরুল খাওয়ার আগে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা ভালো-

১. জামরুল খাওয়ার আগে অবশ্যই ধুয়ে খাবেন।
২. বেশি পরিমাণে জামরুল খাবেন না।
৩. থেতলে যাওয়া বা পচা জামরুল পরিহার করুন।