দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রান্নায় মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে হলুদ। এটি এখন রান্নার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যারা স্বাস্থ্য সচেতন তাদের কাছে পছন্দের একটি মশলা এই হলুদ। অধিকাংশ তরকারিতে তো বটেই, দুধ কিংবা কফির সঙ্গেও যোগ করা হয় এই মশলা। এতে কেবল স্বাদই বাড়ে না, সেইসঙ্গে খাবারের পুষ্টিগুণও বাড়ে অনেকাংশে।
কাঁচা হলুদের উপকারিতা:
হালকা গরম দুধ, পানি বা চায়ের সাথে কাঁচা হলুদ খেলে তা ঠান্ডা ও ফ্লু প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। হলুদের গুঁড়ার পাশাপাশি কাঁচা হলুদও সমান উপকারী।
গবেষণা কী বলে:
পাবলিক লাইব্রেরি অব সায়েন্সের জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে,হলুদে থাকা কারকিউমিনের মধ্যে রয়েছে প্রদাহ প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য। এটি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করতে পারে বলে জানা যায়। হলুদে অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং অন্ত্রে স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
হলুদের আরও কিছু উপকারিতা:
হলুদে বিটা ক্যারোটিন, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রণ, নিয়াসিন, পটাসিয়াম, দস্তা, ফ্ল্যাভোনয়েডস এবং অন্যান্য পুষ্টি সহ তিনশোরও বেশি পুষ্টি রয়েছে। তবে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের দৃষ্টি আকর্ষণকারী সর্বাধিক সক্রিয় যৌগটি হলো কারকিউমিন।
হলুদ খাওয়ার সেরা উপায়:
কালো গোল মরিচের গুঁড়ার সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন কাঁচা হলুদের সঙ্গে গোল মরিচ মিশিয়ে খেতে।
হলুদ খাওয়া শুরু করার দুটি সহজ উপায়:
এক ইঞ্চি কাঁচা হলুদ এবং এক চা চামচ ঘি মিশিয়ে নিন। আপনার যদি অবিরাম শুকনো কাশি হয় তবে এটি প্রতিদিন খান।
দুধের সঙ্গে হলুদ ফুটিয়েও পান করতে পারেন। এটি অত্যন্ত উপকারী। কারণ এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা দেয়। বিশেষ করে শ্বাসনালীর সংক্রমণে আক্রান্তদের হলুদ দুধ খাওয়া উচিত, যাকে গোল্ডেন মিল্কও বলা হয়। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হলুদ উপকারী হিসাবে পরিচিত।
আরও কিছু সুবিধা:
* হজমে সহায়তা করে।
* রক্ত পরিশোধিত করে এবং শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে।
* পেটের আলসার দূর করতে সাহায্য করে।
* ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
* শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
* রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।