চীনের সঙ্গে বিশাল অংশীদারত্ব চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই ভারতের সঙ্গে করা চুক্তি থেকে একের পর এক সরে আসছে ইরান। গত সপ্তাহে ইরানের চাবাহার বন্দরের রেলওয়ে সংযোগ পরিকল্পনা থেকে বাদ পড়ার পর, এবার দেশটির একটি বড় গ্যাসক্ষেত্র প্রকল্প হারাতে চলেছে ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের ‘ফারজাদ- বি’ গ্যাসক্ষেত্রটি ইরান নিজেদের অর্থায়নেই উন্নয়ন করবে বলে জানিয়েছে। তবে ভারত পরবর্তী ধাপের উন্নয়নে অংশ নিতে পারে।’ বৃহৎ ওই গ্যাসক্ষেত্রটি খনন ও উন্নয়ন নিয়ে গত ১০ বছর থেকেই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা করছিল নয়াদিল্লি।

২০১৬ সালের মে মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তেহরান সফরের সময় ইরানের চাবাহার সমুদ্রবন্দর থেকে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া ইরানি শহর জাহেদান পর্যন্ত ৬২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন নির্মাণের জন্য ভারত, ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যে ত্রিদেশীয় চুক্তি হয়েছিল তা থেকে এর আগে ভারত বাদ পড়ে।

তাতে সই করে ইরান, ভারত ও আফগানিস্তান। গত সপ্তাহে ইরানের জাতীয় তেল কোম্পানি এনআইওসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্যাসক্ষেত্রটির উন্নয়ন ও পরিচালনায় ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের কথা জানান। সমালোচকরা বলছেন, এটা ভারত মার্কিন ঘনিষ্ঠ আর ইরান চীনঘনিষ্ঠ হওয়ার ফল।

ইরান সরকার ওই সময় জানায়, নিজেদের অর্থেই শেষ করা হবে ওই প্রকল্প। একই সঙ্গে দেশটি বলেছে, প্রকল্প দেরি হওয়ায় এবং ভারত থেকে অর্থ পাওয়ার অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার পর এক সপ্তাহ না পেরোতেই এবার ‘ফারজাদ- বি’ গ্যাসক্ষেত্র থেকে বাদ পড়ছে ভারত।

২০০৮ সালে ভারতের তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি কোম্পানি ওএনজিসি, ওয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশনের এক যৌথ অনুসন্ধানে ‘ফারজাদ- বি’ গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। এরপর খনিটির উন্নয়ন ও পরিচালনার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল ওএনজিসির সঙ্গে।

ফারজাদ- বি গ্যাসক্ষেত্রে মজুদের পরিমাণ ২১ লাখ ৭০ হাজার কোটি ঘনফুট। এরমধ্যে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ ১২ লাখ ৮০ হাজার কোটি ঘনফুট। এছাড়াও, ২১ কোটি ২০ লাখ টন আছে প্রাকৃতিকভাবে তরলীকৃত গ্যাসের উপস্থিতি। চুক্তির আওতায় খনি উন্নয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয় ভারতীয় কোম্পানিটিকে।