বর্তমান ব্যস্ত সময়ে জীবনযাপনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক আমরা এড়িয়ে যাচ্ছি অবহেলায়। করোনাভাইরাসের এই সময়ে পরিবর্তন স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। বদলে গেছে খাবারের ধরনও। বাড়িতে থাকার কারণে অনেক সামনে যা পাচ্ছেন, তাই খেয়ে নিচ্ছেন। মেনে চলছেন না রুটিনও। ফলে নানারকম সমস্যা দেখা দেয় শরীরে। দেখা দিতে পারে পাইলসের মতো সমস্যাও।
পাইলসের মূল কারণ হলো খাদ্যাভাস ও অনিয়মিত জীবনযাত্রা। পাইলস সাধারণত দুই প্রকার। প্রথমটি হলো এক্সটার্নাল পাইলস, যাকে ব্লাইন্ড পাইলসও বলে। দ্বিতীয়টি হলো ইন্টারনাল পাইলস, যাকে ব্লিডিং পাইলসও বলে। ইন্টার্নাল পাইলস খুবই বিপদজনক। কারণ, এর থেকে প্রায়শই রক্তক্ষরণ হতে দেখা যায়। রক্তক্ষরণ দীর্ঘস্থায়ী হলে মলদ্বারে ক্যান্সারও হতে পারে।
অনেকে মনে করেন, পাইলস বংশগত রোগ। এটি অবশ্য সবার ক্ষেত্রে নাও হতে পারে। কারণ মলত্যাগের প্রক্রিয়া মসৃণ হলে পাইলসের সমস্যা হবে না। অন্যথায় দেখা দিতে পারে এই ধরনের সমস্যা। ফলে মলত্যাগের সময় রক্তক্ষরণ হতে পারে, সেইসঙ্গে অসহ্য ব্যথাও হয়।
এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, শতকরা প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ পাইলসে আক্রান্ত হন। তবুও অনেকেই এই রোগটিকে এড়িয়ে চলেন, চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। কিন্তু এই অসুখ বড় বিপদের কারণ হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে পাইলসের সমস্যা দূর করা সম্ভব। এর কারণ হলো, খাবারে পরিবর্তন হলে কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা দূর হবে। আর কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় হলেই দূর হবে পাইলস। পাইলস থেকে দূরে থাকতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন তার তালিকা প্রকাশ করেছে বোল্ডস্কাই-
পাইলসে আক্রান্ত হলে মশলাযুক্ত খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে। অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাবার হজম ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিতে পারে, পাশাপাশি অর্শের ব্যথাও বৃদ্ধি করে।
পাইলস থাকলে কফি এবং চা জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলুন। এগুলো পাইলসের সমস্যাকে আরও বৃদ্ধি করে। সুস্থ থাকতে পান করতে পারেন গ্রিন টি।
প্রায় সব বেকারি আইটেমই অপরিশোধিত ময়দা এবং চিনি দিয়ে তৈরি হয়। যদিও এগুলো সহজেই হজম করা যায়, কিন্তু এগুলো পাচনতন্ত্রের পক্ষে ভালো খাবার নয়। কারণ বেকারির সব খাবারে ফাইবার একেবারেই থাকে না, যা কোষ্ঠকাঠিন্যকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। আর কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে।
অনেকেই প্যাকেটজাতবা তেলেভাজা খাবার খেতে বেশি পছন্দ করেন। আপনি যদি পাইলসের রোগী হন, তবে আপনার উচিত ভাজা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা। কারণ, এগুলো হজম ক্ষমতাকে দুর্বল করে তোলে এবং পাইলসের সমস্যাকেও বৃদ্ধি করে।
আপনি যদি কোষ্ঠকাঠিন্যতে ভোগেন এবং পাইলসের কারণে রক্তক্ষরণ হয়, তবে কিছু সময়ের জন্য মাংস খাওয়া বন্ধ করুন। বিশেষ করে রেডমিট খাওয়া ছেড়ে দিন, পাশাপাশি দোকান থেকে কেনা মাংস জাতীয় বিভিন্ন খাবারগুলোও খাওয়া এড়িয়ে চলুন।