করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা নিয়ে জোবেদা খাতুন সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার (জেকেজি হেলথকেয়ার) জালিয়াতির সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

দ্বিতীয় দফার রিমান্ডে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী ও সিইও আরিফুল হক চৌধুরী এসব তথ্য দিয়েছেন গোয়েন্দাদের।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে দু’জনই একথা স্বীকার করেছে। জেকেজির নমুনা সংগ্রহের কাজ পাওয়া ও জালিয়াতির সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুই কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত দুই সচিব জড়িত।

তদন্তকারী কর্মকর্তা সূত্র বলছে, ডিসেম্বর পর্যন্ত করোনার নমুনা সংগ্রহ করতে পারলে ৫০০ কোটি টাকা পেত জেকেজি। সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে একটি প্রকল্প থেকে তারা এই মোটা অংকের টাকা পেত। জেকেজিকে অবৈধভাবে অনুমোদন দেওয়া সাপেক্ষে সেই টাকার ভাগ পেতেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুই পরিচালক ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই দুই অতিরিক্ত সচিব।

জেকেজির মতো একটা প্রতিষ্ঠান কীভাবে করোনা টেস্ট নমুনা সংগ্রহের অনুমোদন পায় এমন প্রশ্নে ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, জেকেজি মূলত ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট করেছিল তারা। ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় জেকেজির। জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনার মাধ্যমে ওই কর্মকর্তাদের সঙ্গে এমন একটি চুক্তি হয়।

ডিবি পুলিশ বলছে, আমরা তথ্যগুলো গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। সবকিছু মিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এই কর্মকর্তাদের সম্পর্কে অবহিত করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও বলছে, জেকেজি করোনা টেস্ট সার্টিফিকেট জালিয়াতি করে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত এক ব্যবসায়ীর কাছে ওই টাকা গচ্ছিত রয়েছে। ওই ব্যবসায়ী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে। দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।

অন্যদিকে শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন বলেছেন, জেকেজির জালিয়াতির প্রধান অস্ত্র ছিল সাবরিনা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে সে তার ফেসভ্যালু ব্যবহার করে জালিয়াতি করে নানা ধরনের কাজ বাগিয়ে নিতো। তবে তার এই কাজ একা একা সম্ভব হয়নি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মকর্তার সহযোগিতার প্রয়োজন হয়েছে। মামলার তদন্তের প্রয়োজনে আমরা একে একে সবাইকে ডাকবো।