বাংলাদেশের কিছু হাসপাতালে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট বিক্রির ঘটনায় সমালোচনা চলছে বিশ্বব্যাপী। সম্প্রতি ইতালিতে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট নিয়ে যাওয়া বেশ কিছু বাংলাদেশিকে চিহ্নিত করার পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিষয়টি নজরে আসে। এবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন করেছে প্রভাবশালী আমেরিকান সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) নিউ ইয়র্ক টাইমসে ‘বাংলাদেশে জাল করোনা সনদ বেচার রমরমা ব্যবসা’ শিরোনামে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট দেওয়া রিজেন্ট হাসপাতাল এর মালিক সাহেদ করিম, জেকেজি ও ডা. সাবরিনা-আরিফুল দম্পতির প্রতারণাসহ বাংলাদেশে করোনার বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার চিত্র তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে রিজেন্ট হাসপাতাল কর্তৃক ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিকদের জাল করোনা সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার দেশটির অভিবাসী শ্রমিকদের কাছে হাজার হাজার জাল করোনা সনদ বিক্রি করা এক হাসপাতাল মালিককে গ্রেফতার করেছে।

বুধবার (১৫ জুলাই) নারীর ছদ্মবেশে সীমান্ত দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাহেদ নামের ওই হাসপাতাল মালিককে আটক করা হয় বলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দেশটির পুলিশ জানায়, বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত সাহেদ বোরখায় নিজেকে ঢেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

গত দেড় সপ্তাহ ধরে দেশটির তদন্ত কর্মকর্তারা সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণা বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে পেরেছেন। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় তার হাসপাতাল। তিনি ৫ হাজার করে টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট বিক্রি করে আসছিলেন।

দেশটিতে আটকে পড়া অভিবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকরা বর্তমানে এই সার্টিফিকেট পেতে মরিয়া। ফলে সেখানে জাল সার্টিফিকেটের বিশাল এক বাজার তৈরি হয়েছে। এই অভিবাসী শ্রমিকরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে মুদি দোকান-আড়তে কাজ করা, রেস্তোরার টেবিল পরিষ্কার করা, রাস্তায় পানি বিক্রি করাসহ বিভিন্ন কাজের সঙ্গে যুক্ত।

করোনা পরিস্থিতিতে দেশে গিয়ে আটকে পড়ায় এখন তারা কর্মক্ষেত্রে ফিরতে ব্যাকুল। কাজে যোগ দেওয়ার শর্ত হিসেবে কর্তৃপক্ষ করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দাবি করায় সম্প্রতি এ ধরনের জাল সার্টিফিকেট নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে ফেরেন অনেক শ্রমিক।

বাংলাদেশ সরকারের সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ভুয়া করোনা সার্টিফিকেট সরবরাহের বিষয়টি নজরে এলে বাংলাদেশের পুলিশ রিজেন্ট হাসপাতালের মালিক সাহেদকে গ্রেফতারে তৎপর হয়ে ওঠে। কিন্তু টের পেয়ে তিনি গা ঢাকা দেন বলে কর্তৃপক্ষ জানায়। পরে ৯ দিনের অনুসন্ধান শেষে বুধবার দেশটির সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।