করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে পুরো পৃথিবীই স্থবির ছিল অনেকটা সময়। ধীরে ধীরে পৃথিবী তার আগের রূপে ফিরতে শুরু করেছে। অনেক জায়গায় লকডাউন উঠিয়ে নেয়া হচ্ছে। তবে সচেতনতার কারণে বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকছেন অনেকেই। ঝুঁকি এড়াতে বাড়িতে বসেই সারছেন অফিসের কাজ।
বাড়িতে বসে কাজ করার কারণে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু সারাদিন ঘরে থাকার জন্য বাড়ছে স্বাস্থ্য বিষয়ক অন্য ঝুঁকি। যেমন ঘরে থাকার কারণে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যেই। এমনটাই জানাচ্ছে ফেমিনা।
যারা ঘরে থেকে কাজ করছেন তারা বিশ্রাম হয়তো পাচ্ছেন না। ঘর ও অফিসের মধ্যে একই সময়ে সামঞ্জস্য রক্ষা করতে গিয়ে মানসিক চাপ বাড়ছে। কিন্তু টানা এক জায়গায় বসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করার ফলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
করোনা আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে ওয়ার্ক আউট করার প্রবণতাও কমেছে। এটিও একটি বড় কারণ ওজন বেড়ে যাওয়ার পেছনে। যে রুটিনে কর্মরত নারী-পুরুষ অভ্যস্ত ছিলেন সেই রুটিনটাই গোলমাল হয়ে গেছে। এর সঙ্গে রয়েছে ঘরে থাকার কারণে ইচ্ছেমতো খাবার খাওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি। ঘরে থাকার জন্য এটা-ওটা খাওয়ার ইচ্ছেও বেড়েছে অনেকের মধ্যে। এই কারণেও বাড়ছে ওজন।
ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা পুরুষদের থেকে মহিলাদের মধ্যে বেশি লক্ষ করা গেছে। যেখানে ২২ শতাংশ পুরুষ ওজন বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন সেখানে ৪৭ শতাংশ মহিলা তাদের ওজন অনেকটাই বেড়েছে বলে জানিয়েছেন।
ওজন বৃদ্ধির আরও একটা বড় কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা চিহ্নিত করেছেন মানসিক চাপকে। লকডাউন আমাদের জীবনে নিয়ে এসেছে অনিশ্চয়তা। আর্থিক ক্ষতির কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বহু কোম্পানি। বহু সংস্থাই কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে।
ভবিষ্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা গ্রাস করছে সাধারণ মানুষকে। এই অনিশ্চয়তা থেকে যে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ জন্ম নিচ্ছে তার কারণেও বাড়ছে ওজন। চাপ কমাতে অনেকেই জাংক ফুড খাওয়ার দিকে ঝুঁকছেন। সব মিলিয়ে চাপ পড়ছে আমাদের স্বাস্থ্যে।
বাড়িতে বসে কাজ করলেও কিছুক্ষণ পরপর বিরতি নিতে হবে। মাঝে মাঝে নিজের চেয়ার ছেড়ে উঠুন। ফোন এলে পায়চারি করতে করতে কথা বলুন। কাজে বসার আগে বা কাজ শেষে কিছুক্ষণ ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা যোগ ব্যায়াম করুন। নিজের মাথা যতটা সম্ভব চিন্তামুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন। এর ফলে স্ট্রেস কমবে। নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে ওজন।