আমরা প্রায় সবাই দিনের একটি বড় অংশ সেলফোনে স্ক্রল করে এবং আমাদের ল্যাপটপে কাজ করে ব্যয় করি। যদিও আমরা ভালোভাবেই জানি যে, দীর্ঘকাল ধরে গ্যাজেট ব্যবহার করা আমাদের শরীর এবং চোখের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তবুও আমরা গ্যাজেট ব্যতীত জীবন কল্পনা করা অসম্ভব বলেই মনে করি। তবে গ্যাজেটগুলোর নীল আলোর ক্ষতিকর প্রভাব কেবল চোখের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি আমাদের ত্বকেও বিরূপ প্রভাব ফেলে।

আমরা আমাদের ত্বকের আভা ও কোমলতা বজায় রাখতে নানারকম উপায় মেনে চলি। ঘর থেকে বের হওয়ার আগে স্ক্রাবিং, ময়েশ্চারাইজিং এবং সানস্ক্রিন ব্যবহার করি। ত্বকের যত্নে এতটা সচেতন থাকার পরেও ক্ষতি হচ্ছে অন্যভাবে। আপনার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর নীল আলো আপনার ত্বকের ক্ষতি করছে।

নীল আলো কী
আশ্চর্যজনকভাবে, নীল আলো কেবল আমাদের গ্যাজেট দ্বারা নির্গত হয় না, বরং সূর্যের আলোর মাধ্যমেই এই আলো বিকিরিত হয়। ব্লু লাইট দৃশ্যমান আলোর বর্ণালীর একটি অংশ, যা উচ্চ-শক্তি, স্বল্প-তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলো।

নীল আলো কেন উদ্বেগের প্রধান কারণ হয়ে উঠেছে? আসল বিষয় হলো, শুধু বাইরে থাকাকালীনই নয়, বাড়িতে থেকেও আমরা এর হাত থেকে রেহাই পাচ্ছি না। কারণ যখন আমরা বাড়িতে থাকি তখন হয়তো টেলিভিশন দেখি বা ল্যাপটপে কাজ করি।

নীল আলো এবং ত্বকের ক্ষতি
নীল আলোর দীর্ঘায়িত সংস্পর্শে ত্বকে বাদামী দাগ এবং হাইপারপিগমেন্টেশন হতে পারে। এগুলো ছাড়াও এই আলো ত্বকের ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতি করতে পারে। এটি সম্ভবত কোলাজেনকে ভেঙে দেয়, যা চুলকানি বাড়ায় এবং ত্বকে শিথিলভাব নিয়ে আসে।

জার্নাল অফ ইনভেস্টিগেশনাল চর্মাটোলজিতে প্রকাশিত এক সমীক্ষা অনুসারে, ইউভিএ রশ্মির সংস্পর্শের তুলনায় অতিরিক্ত নীল আলোর সংস্পর্শে আরও পিগমেন্ট, লালচেভাব এবং ফোলাভাব দেখা দেয়।

তবে জার্নাল অক্সিডেটিভ মেডিসিন এবং সেলুলার লঙ্গিভিটিতে প্রকাশিত আরেকটি গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে যে নীল আলোর সংস্পর্শে ত্বকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের উৎপাদন বেড়ে যেতে পারে, যা দ্রুত চেহারায় বার্ধক্যে ডেকে আনে।

আমাদের ত্বকে নীল আলোর কৃত্রিম উৎসগুলোর সংস্পর্শের সঠিক প্রভাব নির্ধারণের জন্য এ বিষয়ে প্রচুর গবেষণা প্রয়োজন। তবে এটি যে আমাদের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর তা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত।

সাবধানতা
প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে, আমাদের ত্বককে সুরক্ষিত এবং স্বাস্থ্যকর রাখা জরুরি। ত্বকের ক্ষতি কমাতে এই কাজগুলো করতে পারেন-

* অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করতে পারে। সুতরাং, আপনার ডায়েটে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন।

* আপনার ত্বককে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজ করুন। আপনার মুখের পাশাপাশি গলায় ময়েশ্চারাইজার লাগান।

* পর্যাপ্ত পানি পান করুন। পানি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে এবং এর স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সহায়তা করে।