রোজ অফিস আর বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকায় জিমে যাওয়া হয় না। বাড়িতেও সময় বের করা হয়ে ওঠে না। ফলে বাড়ছে স্ট্রেস। শরীরও মুটিয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় একটা দারুন ও সহজ উপায় আছে। সহজ-সরল সেই ব্যায়ামটি হল, হাঁটা। এটি কম পরিশ্রমে উপযুক্ত একটি ব্যায়াম, সব বয়সের মানুষের জন্য।যাকে বলে, নিখরচায় শরীরচর্চা।

যেখানে-সেখানে করা যায় এই শরীরচর্চা। পার্ক হোক বা লেকের ধার বা রাস্তার পাশে ফুটের উপর দিয়ে ১০ মিনিট হাঁটলেও কম কী? ইদানীং গবেষকেরা বলছেন, হৃৎযন্ত্র ও রক্তনালির সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা, জগিং ও দৌড়ানো সমান সুফল আনে। বস্তুত কারও কারও জন্য হাঁটা এর চেয়েও ভাল ব্যায়াম। কারণ, হাঁটলে শরীরের ওপর চাপ পড়ে না।

দৌড়ালে অনেক সময় হাড়ের গিঁটে ব্যথা হয়, আহত হয় পেশি। এটা বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু হাঁটাহাঁটি করে আহত হওয়ার কথা শোনা যায় না। বড় সহজ এই হাঁটা। বিশেষ কোনো পোশাক পরার দরকার নেই। ঘেমে-নেয়ে ওঠার প্রয়োজন নেই। আরাম-আয়েশেও হাঁটা যায় যত্রতত্র। সপ্তাহে ছয় দিন ৩০ মিনিট জোরে হাঁটাই যথেষ্ট। তবে পেশি যেহেতু এত কঠোর পরিশ্রম করে, সে জন্য এর প্রয়োজন হয় প্রচুর অক্সিজেন। ব্যায়ামে তৈরি হয় ল্যাকটিক অ্যাসিড। অম্লতা রোধের জন্য চাই প্রচেষ্টা।

ল্যাকটিক অ্যাসিড জমা হওয়ায় পেশি হয় শক্ত ও বেদনার্ত। হাঁটলে তেমন হয় না। হূৎপিণ্ড জোরে পাম্প করে, বাড়ায় রক্তপ্রবাহ। তবে পেশির ওপর এত কঠোর প্রভাব ফেলে না। শরীরে তৈরি হয় না ল্যাকটিক অ্যাসিড। তাই শরীরের ওপর কম চাপ প্রয়োগ করেও রক্ত সংবহনতন্ত্রের উজ্জীবনে সাহায্য করে। দেহের সঞ্চিত মেদ অবমুক্ত হয়ে বিপাক হয়। শরীরের ওপর যেহেতু এর চাপ কম, সে জন্য যে কেউ পুরো সপ্তাহ হাঁটলেও খারাপ লাগে না। অনেক অসুস্থ মানুষও এই হাঁটাকে ব্যায়াম হিসেবে নিতে পারেন। শুরু হোক ধীরে ধীরে। প্রথম দিন ১০-১৫ মিনিট। এরপর গতি বাড়ান, সময় বাড়ান। ২০-৩০ মিনিট। এরপর ব্রেক নিন১০ মিনিটের। পাঁচ-দশ মিনিট ধীরে হেঁটে থামুন। ভিড়-ভাট্টা ও ব্যয়বহুল জিম থেকে নিখরচায় হাঁটা অনেক ভাল।