মুখের ত্বকের যত্ন আমরা কমবেশি সবাই নিই। কিন্তু, হাত-পায়ের যত্নের কথা প্রায় সময়ই ভুলে যায়। মুখের ত্বকের যতখানি যত্ন দরকার, তেমনি হাত-পায়ের যত্নও প্রয়োজন। কারন, মানুষের হাত-পায়ের সৌন্দর্যেই তার রুচির পরিচয় পাওয়া যায়। বেশি না, প্রতি সপ্তাহে মাত্র ঘণ্টা খানেক সময় নিয়ে, যদি নিজের হাত-পায়ের যত্ন সঠিক ভাবে নিতে পারেন, তাহলেই হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন নেই, পার্লার অথবা বাড়তি খরচের।
বাড়িতে বসে হাত-পায়ের সঠিক পরিচর্যাঃ
আপনার প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র কয়েকটা জিনিসের। যা, আমাদের ঘরেই সবসময় থাকে। খাওয়ার লবণ, অলিভ অয়েল, বড় পাত্র, গরম জল আর কিছু টুলস। যেমন- নেইল কাটার, নেইল ফাইলার, কিউটিকল কাটার/পুশার ইত্যাদি।
প্রথমেই নখে যদি নেইপলিশ দেওয়া থাকে, তাহলে, নেইলপলিশ রিমুভারের সাহায্যে তা উঠিয়ে ফেলুন। তারপর,একটি বড় পাত্রে উষ্ণ গরম জল নিন। যাতে হাত-পা ভিজাতে পারবেন। তাতে, চার টেবিল চামচ লবণ অথবা যতটুকু লাগে জল নিয়ে সেই অনুযায়ী সমপরিমাণ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এরপর তাতে ১৫ মিনিট হাত-পা ভিজিয়ে রাখুন। ১৫ মিনিট পর একে একে লিকুইড সাবান আর ব্রাশ দিয়ে হাত ও পায়ের উপরিভাগ পরিষ্কার করে নিন। পায়ের গোড়ালি পরিষ্কার করতে পিউবিক স্টোন বা এর জন্য উপযোগী কোন ব্রাশ ব্যবহার করুন। এরপর নখের উপরে অলিভ অয়েল দিয়ে কিছুটা সময় নিয়ে মাসাজ করুন। সাথে নখের কিউটিকল গুলো ভিতরের দিকে চেপে দিন। এক্ষেত্রে কিউটিকল পুশার ব্যবহার করতে পারেন।
কিউটিকল নখের পাশে বাড়তি মৃত চামড়া থাকলে তা কিউটিকল কাটার দিয়ে কেটে ফেলুন। একটু সাবধানে কাটবেন যাতে সজীব চামড়া কেটে না যায়। এরপর নেইল কাটার দিয়ে নখ পছন্দমতো শেপে কেটে ফাইলার দিয়ে ধার গুলো মসৃণ করে নিন। আবার কিছুক্ষণ তেল দিয়ে মাসাজ করুন, ছোট টুথব্রাশ দিয়ে নখের উপরটা পরিষ্কার করে নিন। পুনরায় ১৫ মিনিট হাত-পা গরম জলে ভিজিয়ে রাখুন। এ পর্যায়ে, আপনি মুখের জন্য যে প্যাক গুলো ব্যবহার করেন, তা, হাতে-পায়েও লাগিয়ে নিতে পারেন। এগুলি পায়ের ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে। শেষে সাবান দিয়ে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
বাজারে ফ্লোরমার, গোল্ডেন রোজ, এলিক্স-এভিয়েন ইত্যাদি ব্র্যান্ডের মেনিকিউর-পেডিকিউরের উপযোগী নানা রকম প্রোডাক্ট পাওয়া যায় যেমন কিউটিকল অয়েল, কিউটিকল রিমুভিং জেল, ক্যালসিয়াম জেল ইত্যাদি। চাইলে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। এগুলোর দামও তেমন বেশি না। নখের মাসাজের জন্য অলিভ অয়েল-এর পরিবর্তে ভ্যাসলিন অথবা কিউটিকল অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। কিউটিকল রিমুভিং জেল কিউটিকলের মৃত চামড়া পরিষ্কার করতে এবং নখের হলুদাভ দাগ পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম জেল নখের ভঙ্গুরতা কমায়, এটি নখে নেইলপলিশ পড়ার আগে অথবা এমনিও ব্যবহার করতে পারেন।
সাপ্তাহিক যত্নের পাশাপাশি প্রতিবার স্নানের সময় ছোট ব্রাশ দিয়ে নখ পরিষ্কার করে নিন। নেইলপলিশ সপ্তাহে অন্তত দুবার পরিবর্তন করুন আর মাঝে কিছুটা সময় দিন, তাতে নখ সুস্থ থাকবে। নখ যদি বেশি হলুদাভ হয়ে যায় তবে হোয়াইটেনিং টুথপেস্ট নখে ঘণ্টাখানেক লাগিয়ে রাখলে ৮০% পর্যন্ত হলুদাভ ভাব কমে যায়। হাতে পায়ে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে ভুলবেন না। যদি আপনি কর্মজীবী হন তাহলে সম্ভব হলে বাইরে বের হবার সময় ব্যাগে ছোট ময়েশচারাইজার নিয়ে নিন যাতে দিনের শুষ্কতা থেকে।