চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার সময় বিমান বন্দরে দেখা। ভদ্রলোক বললেন তিনি প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি সংক্রান্ত প্রধান। জনাব আবুল কালাম এর স্থলাভিসিক্ত। ঢাকা ফিরে জানলাম বিষয়টি পুরাই মিথ্যা। কিন্তু কিছু পুলিশ/ আনসার তাকে সালাম দিয়ে বিদায় দিল। বিগত ডিসেম্বরের ঘটনা বলছি। শাহেদ/সা‌হেদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকলেও তার আসল নাম কিন্তু মোঃ শাহেদ করিম, পিতাঃ সিরাজুল করিম, মাতাঃ মৃত সুফিয়া করিম।
শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএস‌সি। তার মা মৃত্যুবরন করেন ০৬ নভেম্বর ২০১০ইং সালে। প্রতারক শা‌হে‌দের একাধিক নাম রয়েছে সে কখনো কখ‌নো মেজর ইফতেকার আহম্মেদ চৌধুরী, ক‌র্ণেল ইফতেকার আহম্মেদ চৌধুরী, কখ‌নো মেজর শাহেদ করিম হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে, কিন্তু তার আসল নাম জাতীয় পরিচয় পত্রে শাহেদ করিম লেখা।
কিন্তু বর্তমানে সে মোঃ শাহেদ নামে আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করছে যার নাম্বার হলঃ ২৬৯২৬১৮১৪৫৮৮৫ আর এ জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয় ২৫-৮-২০০৮ইং। কিন্তু তাতে তার মা মারা গেছে লেখা রয়েছে, অথচ তার মা মৃত্যুবরন করেন ০৬ নভেম্বর ২০১০ইং। তাতেই প্রমান হয় এটাও ভুয়া। ঠিকানা হরনাথ ঘোষ রোড, লালবাগ, ঢাকা-১২১১ রয়েছে। গ্রামের বাড়ী সাতক্ষীরা জেলায়। এক নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান হয়েও প্রতারণা বাটপারি করে আজ শত শত কোটি টাকার মালিক। বিএনপি সরকারের আমলে রাজাকার মীর কাসেম আলী ও গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাথে সর্ম্পক গড়ে তা‌দের মাধ্য‌মে তা‌রেক জিয়ার হাওয়া ভব‌নের অন্যতম কর্তাব্য‌ক্তি হ‌য়ে উ‌ঠে সে।
শা‌হে‌দের বেশ কিছু প্রতারণার প্রমাণ তৎকালীন প্রভাবশালী ছাত্রদল নেতা বর্তমা‌নে জাতীয় পা‌র্টির সাংগ‌ঠিনক সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জু Smhussain Monju, ঢাকা বিশ্ব‌বিদ্যালয়ের সা‌বেক সাহসী ছাত্রলীগ নেতা এসএম হ‌লের শামীম তথা শামীম অাহ‌মেদ এবং সা‌বেক ছাত্রলীগ নেতা Polash Chowdhury’র কা‌ছে র‌য়ে‌ছে।১/১১ ফকরু‌দ্দিন সরকা‌রের সময় আর খাম্বা মামুনের সাথে সে ২ বছর জেলও খাটে। জেল থে‌কে বের হ‌য়ে শা‌হেদ ২০১১ সালে ধানমন্ডির ১৫ নং রোডে এমএলএম কোম্পানী বিডিএস ক্লিক ওয়ান নাম বাটপারী ব্যবসা প্র‌তিষ্ঠান খু‌লে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা ক‌রে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। আর সেসময় তার নাম ছিল মেজর ইফতেখার করিম চৌধুরী।
তার বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় ২টি মামলা, বরিশালে ১ মামলা, বিডিএস কুরিয়ার সার্ভিস এ চাকুরীর নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারনার কারনে উত্তরা থানায় ৮টি মামলাসহ রাজধানীতে ৩২টি মামলা রয়েছে। অন্যদিকে সে মার্কেন্টাইল কো- অপারেটিভ ব্যাংক বিমানবন্দর শাখা থেকে ৩ কোটি টাকা লোন নেয় আর সেখানে সে নিজেকে কর্ণেল (অব.) পরিচয় দিয়ে কাগজপত্র দাখিল করেন সে ব্যপারে আদালতে ২টি মামলা চলমান অা‌ছে। এ সম্প‌র্কে একুশে টিভি ২০১৫/১৬ সা‌লে একটি প্রতিবেদনও প্রকাশ করে।
এই প্রতারক মোঃ শাহেদ ওরফে ‌মেজর/ক‌র্ণেল ইফতেখার আহম্মেদ চৌধুরী, ওরফে শাহেদ করিম, ওরফে মোঃ সাহেদ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকা‌রের বি‌ভিন্ন মন্ত্রী ও কর্তা ব্য‌ক্তি‌দের কা‌ছের লোক পরিচয় দিয়ে থাকে। প্রকা‌শ্যে অ‌নেক মন্ত্রীর নাম ব্যবহার করেই মানুষকে হুমকি ধমকি দিয়ে থাকে। তার গাড়ীতে ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড ও সাইরেনযুক্ত হর্ন ব্যবহার করে। সে নিজেকে কখনো মেজর, ক‌র্ণেল, সচিব, এমনকি সে নাকি ৯৬ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রীর এডিসি ছিলো এমন পরিচয়ও দিয়ে থাকে। আবার কিছুদিন যাবৎ সে বিভিন্ন টিভিতে টকশোতে খুব নীতিবাক্য বলে। বর্তমানে সে উত্তরাস্থ ১১ নং সেক্টরের ১৭ নং রোডে, বাড়ী নং-৩৮ একটি হাসপাতাল গড়ে তুলেছে যার কোন বৈধ্য লাইসেন্স নেই, যা র‌্যাব এর অভিযানেই প্রমানিত হয়েছে আর হাসপাতাল চালা‌নোর মত কোন ডাক্তার, নার্স, যন্ত্রপা‌তি নেই তবুও দালালের মাধ্যমে টংগী সরকারী হাসপাতাল, বাংলাদেশ মেডিকেল ক‌লেজ হাসপাতাল থেকে রোগী ক্রয় করে এনে তাদের আটকিয়ে রেখে হাজার হাজার টাকা আদায় করে।
এছাড়াও প্রতারণার টাকায় সে উত্তরা প‌শ্চিম থানার পা‌শে গ‌ড়ে তু‌লে‌ছে রিজেন্ট কলেজ ও ইউনির্ভাসিটি, আরকেসিএস মাইক্রোক্রেডিট ও কর্মসংস্থান সোসাইটি যদিও এর একটিরও কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। আর অনু‌মোদনহীন আরকেসিএস মাইক্রোক্রেডিট ও কর্মসংস্থান সোসাইটির ১২টি শাখা করে হাজার হাজার সদস্যদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা অাত্মসাৎ করেছে। এর আগেও সে উত্তরাস্থ ৪,৭ ও ১৩ নম্বর সেক্টরে ভূয়া শিপিং এর ব্যবসা করেছে সেই ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামেই সাধারন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে মেরে দিয়েছে।
বর্তমানে তার ভিজিটিং কার্ডে সে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান প‌রিচয় দেয়। কিছুদিন আগে সে এক‌টি অস্ত্রের লাইসেন্সও নিয়েছে। অথচ অ‌স্ত্রের লাই‌সেন্স কর‌তে বাৎস‌রিক ন্যূন্যতম ৩ লক্ষ টাকা ইনকাম ট্যাক্স দেওয়া লা‌গে। অামার জানাম‌তে সে কোনদিনও ইনকামট্যাক্স দেয় না। শা‌হে‌দের প্রতারনা সর্ম্পকে দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকায় ১১-১২-২০১৪ইং একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় এবং অপরাধ জগত প‌ত্রিকাও নিউজ ক‌রে। শা‌হে‌দের বেশ ক‌য়েক‌টি গাড়ী রয়েছে সে গাড়ীগুলোর কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। তার গাড়ী‌তে ভিভিআইপি ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড, অ‌বৈধ ওয়ারল্যাস সেট আর অস্ত্রসহ ৩ জন বডিগার্ড থাকার কারনে সাধারনত পুলিশ তার গাড়ী থামাবার সাহস পায়না।
তার অফিসে লাঠিসোটা রাখা হয় এমনিক তার অফিসের ভেতরে একটি টর্চার সেলও রয়েছে। কোন পাওনাদার টাকা চাই‌তে অাস‌লে পাওনাদার‌দের সেখা‌নে টর্চার করা হয়। তার অফিসে সুন্দরী মেয়েদের রাখা হয় বেশী আর অনেক সুন্দরীর সাথে তার অবৈধ সর্ম্পক র‌য়ে‌ছে।তার বিরুদ্ধে ৩২ টি মামলা রয়েছে দেশের বিভিন্ন থানায় এর মধ্যে ধানমন্ডি, মিরপুর, উত্তরায় বেশী সেগুলোর ক‌য়েক‌টি মামলার নং-বাড্ডা- ৩৭(৭)০৯, আদাবর-১৪(৭)০৯, লালবাগ-৪৭(৫)০৯,উত্তরা ২০(৭)০৯, উত্তরা১৬(৭)০৯,উত্তরা ৫৬(৫)০৯,উত্তরা ১৫(৭)০৯, ৩০(৭)০৯, ২৫(৯)০৯, ৪৯(০৯)০৯, ১০(৮)০৯ সবগুলো মামণাআ ৪২০ ধারায়।তার প্রতিষ্ঠান রিজেন্ট কেসিএস লিঃ ইউসিবি ব্যাংক উত্তরা শাখায় একাউন্ট নং-০৮৩২১০১০০০০১০০০৩, রিজেন্ট হাসপাতাল লিঃ ইউসি
সাবেক সেনা কর্মকর্তা

অনলাইন ডেস্ক