বর্তমানের ব্যস্ততামুখরতায় চাপ জীবনেরই একটি অনাহূত অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু হয়তো একেবারেই চাপমুক্ত থাকা সম্ভব নয়, তবে তা মোকাবেলা করতে অবলম্বন করতে পারেন বেশ কিছু ইতিবাচক কৌশল। এ কৌশলগুলো আপনাকে জীবনে একটু হলেও হাঁপ ছেড়ে বাঁচার অবকাশ এনে দেবে।

লক্ষ্য স্থির করুন:
আপনার কি সব সময় মনে হয় যে কাজের তুলনায় আপনার হাতে যথেষ্ট সময় নেই? তাহলে আপনার প্রয়োজন একটি বাস্তবসম্মত লক্ষ্য ঠিক করা। সময় অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করুন এবং যতটা সম্ভব সংগঠিত থাকার চেষ্টা করুন। দেখবেন কাজের বাড়তি চাপ অনেকটাই কমে আসবে।

তালিকা করুন:
কাজের তালিকা তৈরি করুন এবং প্রাধান্য অনুযায়ী কাজ করুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন কোন কাজ বেশি জরুরি এবং কোনটা কম বা পরে করলেও চলবে। এভাবে গুরুত্বহীন কাজের পেছনে সময় নষ্ট কম হবে।

বদ অভ্যাস ত্যাগ করুন:
নিজের অভ্যাসগুলোর দিকে তাকান। আপনি কি একটি অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করছেন? সময়ের অভাবকে নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে দেবেন না। তাড়াহুড়ো করে খাবার গ্রহণ বা সময় কম বলে দোকানের অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করবেন না। মানসিক চাপ কমাবে এই ভেবে ধূমপান করবেন না। নিজের জীবনের রুটিনে ছোট ছোট পরিবর্তন নিয়ে আসুন। এতে বদঅভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাবে।

না বলুন:
অনেক সময় কাউকে `না` বলা বা মানা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলস্বরূপ, সাধ্যের চেয়ে বেশি কাজ করতে হয়। আর সেকারণে চাপের পরিমাণও যায় বেড়ে। নিজের সীমাবদ্ধতা বোঝার চেষ্টা করুন। এমন কোনো দায়িত্ব নেবেন না যা আপনি করতে পারবেন না।

বিরক্তির বিরুদ্ধে লড়াই:
যখন আপনি কোনো কারণে বিরক্ত থাকবেন, তখন তা আপনার কাজের ওপরেও প্রভাব ফেলবে। যদি আপনি অতিরিক্ত কাজ বা বিরক্তিকর সহকর্মীদের কারণে অধিক চাপের মুখোমুখি হন, তাহলে আপনার ঊর্ধ্বতনের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলুন। যতটা সম্ভব অপ্রয়োজনীয় বিরোধ এড়িয়ে চলুন এবং ততটাই কাজ করুন যতটা আপনি পারবেন।

মেনে নিতে শিখুন:
আমাদের মানিয়ে চলার অক্ষমতা চাপ বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ। যখন আপনি এটা মেনে নিতে পারবেন যে কোনো বিষয় আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তখন আর এটা নিয়ে বিক্ষ্বুদ্ধ থাকবেন না। মাঝে মাঝে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে কারো সঙ্গে কথা বললে তা অন্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ভাবতে আপনাকে সাহায্য করবে।

নিজের জন্য নিজে:
আমরা যতই ব্যস্ত থাকি না কেন, নিজের জন্য একান্ত কিছু সময় প্রত্যেকেরই প্রয়োজন। অবসর বা বিরতি যে শুধু শরীরের জন্য দরকার তা নয়, বরং এতে মনও হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। লক্ষ্য করে দেখবেন, একান্ত কিছু সময় কাটানোর পর আপনি আরো ভালো করে কাজ করতে পারছেন।

প্রাণ খুলে হাসুন:
শেষ কবে প্রাণ খুলে হেসেছেন? এর পরে যখনই চাপের মুখে পড়বেন, চেষ্টা করুন এর হালকা দিকগুলো দেখতে। জীবনটাকে রসবোধের সঙ্গে দেখতে পারলে প্রতিদিনের চাপ অনেকাংশেই কমে যায়। প্রতিদিন মজার কিছু পড়া বা দেখার অভ্যাস করুন। হাসি আপনার রক্তচাপ এবং দুশ্চিন্তা কমাবে।

এভাবেই বদলে যাবে আপনার জীবন এবং এগিয়ে যাবেন আপনি সামনের দিকে।

মোঃ সাইফুল ইসলাম মল্লিক
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি
লেটস গো অন ফাউন্ডেশন “এলজিএফ”
প্রতিষ্ঠাতা
বাংলাদেশ ইয়ুথ ক্লাব “বিওআইসি”