২০০১ সালে আফগানিস্তানে আমেরিকার সশস্ত্র হামলার ফলে তালেবান সরকারের পতন ঘটে। প্রায় দীর্ঘ ২০ বছর দেশটিতে লড়ায়ের পর চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি কাতারের দোহায় তালেবানের সাথে শান্তি চুক্তির মাধ্যমে খোদ পরাজয় বরণ করে বিশ্বের সুপার পাওয়ার খ্যাত আমেরিকা।

শান্তি চুক্তির নিয়ম মেনে আফগানিস্তান ছেড়ে যাবে আমেরিকার সব সৈন্য। অপরদিকে মার্কিন সমর্থিত আফগান সরকারের কারাগারে বন্দী প্রায় ৫হাজার তালেবানকেও ছেড়ে দিতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করা হয়। চুক্তি মোতাবেক ৩হাজার পাঁচশত তালেবানকে মুক্তি দিয়েছে
আশরাফ ঘানি সরকার।

অপরদিকে সেনাদের নিয়ে যাওয়ার পর মার্কিন মদদপুষ্ট ঘানি সরকার, আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ ও তালেবানের সাথে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওয়াশিংটন।

ওয়াশিংটনের বিশেষ দূত জালমাই খলিলজাদ পাকিস্তানের কর্মকর্তাদেরকে বলেছেন যে, আফগানিস্তানের তালেবান এবং কাবুলের রাজনৈতিক নেতারা যুদ্ধ-পরবর্তী আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আলোচনায় বসার কাছাকাছি চলে গেছে। ফেব্রুয়ারিতে তালেবানদের সাথে আমেরিকার যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, সেই চুক্তির পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এই আফগান-অভ্যন্তরীণ আলোচনা।

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) ইসলামাবাদের মার্কিন দূতাবাস প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

আফগান-অভ্যন্তরীণ আলোচনার পথ সুগম করার জালমাই খলিলজাদ এই সফর করছেন। চলতি মাসেই এই আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এখনও কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে আমেরিকার মদদপুষ্ট আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি বুধবার বলেছেন যে, প্রথম দফা আলোচনা কাতারের দোহাতে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে তালেবানদের রাজনৈতিক অফিস রয়েছে।

তবে উভয় পক্ষকেই চুক্তি অনুযায়ী শর্তের বাকি বন্দীদেরকে মুক্তি দিতে হবে। চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা সমর্থিত আফগান সরকারকে কারাগারে থাকা ৫,০০০ তালেবান বন্দীকে মুক্তি দিতে হবে এবং তালেবানরা ১,০০০ সরকারি সেনাকে মুক্তি দেবে। সরকার এ পর্যন্ত ৩,৫০০ জনকে এবং তালেবানরা প্রায় ৭০০ জনকে মুক্তি দিয়েছে।

“অ্যাম্বাসাডর খলিলজাদ জানিয়েছেন যে, আফগান-অভ্যন্তরীণ সংলাপ শুরুর জন্য দুই পক্ষই কাছাকাছি চলে এসেছে। একই সাথে বাকি ইস্যুগুলো দ্রুত সমাধানের উপর জোর দেন তিনি। তিনি উল্লেখ করেন যে, প্রতিশ্রুত শান্তি নির্ভর করছে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের উপর”।