বিশ্বকাপে টাইগাররা সেমিফাইনালে খেলতে না পারলেও খালি হাতে ফিরে আসেনি মাশরাফির দল। তাইতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কাছে বড় অংকের টাকা পাওনা ছিল জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। যে অর্থ আদায় করে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব)। যে জন্য কোয়াবের সব শেষ সভায় নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তামিম ইকবাল।

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে বাংলাদেশ সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিল ২০১৯ সালের ৫ জুলাই। বিশ্ব আসরে প্রতিটি ম্যাচ জয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪০ হাজার ইউএস ডলার। যা ক্রিকেটাররাই পেয়ে থাকেন। তিনটি ম্যাচ জেতা বাংলাদেশের খেলোয়াড়দেরও তাই পাওনা এক লাখ ২০ হাজার ডলার। দেরিতে হলেও এই অর্থ এক সময়ে তামিম-মাশরাফিরাই পেতেনই।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পরিচালক এবং কোয়াব সভাপতি নাঈমুর রহমান বলেন, ‘বোর্ড থেকে ওদের বিশ্বকাপের টাকা আদায় করার বিষয়ে আমরা দেন-দরবার করেছিলাম। এরপরই বোর্ড থেকে ফোনে ওরা টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা পায়। এ জন্যই গত ৯ মে অনলাইনে হওয়া কোয়াব কার্যনির্বাহী কমিটির সব শেষ সভায় ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে।’

আরেকটি খাতে ক্রিকেটারদের পাওনা বুঝিয়ে দেওয়ায় বোর্ডের আপত্তি থাকায় এখানে কোয়াবের মধ্যস্থতা জরুরি হয়ে পড়ে। সেটা হলো বিশ্বকাপের প্রাইজমানির অর্থ। কোনো ম্যাচ না জিতেও যে টাকা পাওয়ায় ভূমিকা আছে ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ফিকা-রও (ফেডারেশন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন)।

আইসিসি এবং অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে স্বাক্ষরিত সব শেষ এমপিএ অ্যাগ্রিমেন্টে সেটিই নিশ্চিত করেছিল সংস্থাটি। তাই সেখান থেকেও পাওনা ছিল তামিমদের। টাকার পরিমাণটাও কম নয়।

প্রাইজমানির শতকরা ১০ ভাগ বরাদ্দ ক্রিকেটারদের জন্য বরাদ্দ থাকে। যা বোর্ডের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যেই ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দেওয়ার কথা বলা আছে এমপিএ অ্যাগ্রিমেন্টেও। তবে বিশ্বকাপের পর ১০-১১ মাস পার হয়ে গেলেও সেটির কোনো খোঁজ ছিল না। কোয়াব খোঁজ নিয়ে জানতে পারে প্রাইজমানির অর্থ ক্রিকেটারদের দেয়ার ব্যাপারে আপত্তি আছে বিসিবির।

এই প্রাইজমানির অর্থ ক্রিকেটারদের প্রাপ্য কি না, সেটি নিয়ে সংশয় ছিল বোর্ডের। এ সংশয় অবশ্য দূর করা গেছে বলেও জানিয়েছেন নাঈমুর। তিনি বলেন, ‘ম্যাচ জেতার টাকা ওরা পেতই। প্রাইজমানির টাকা ওদের প্রাপ্য কি না, সেটি নিয়েই একটু দ্বিধা ছিল। তবে বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় সেই দ্বিধাও কেটে গেছে। এখন ওরা প্রাইজমানির টাকাও পাচ্ছে।’

সর্বমোট মিলিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপ দলের সদস্যরা পাচ্ছেন, প্রায় দুই কোটি টাকার মতো। কোয়াব সভাপতি বলেছেন, ‘আর বিলম্বও নয়, ‘ঈদের আগেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এখন অফিস খুললেই খেলোয়াড়দের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়ে যাবে।’

‘খেলোয়াড়রা যাতে দ্রুত টাকা পায়, সেই উদ্যোগ নেওয়ার কথা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির। কিন্তু এই কমিটির ম্যানেজার (সাব্বির খান) আবার জাতীয় দলেরও ম্যানেজার। দুই দায়িত্বেই অনেক কাজ। একসঙ্গে দুটো চালাতে গেলে সমস্যা তো হবেই। এখানেও তাই হয়েছে। হিসাব বিভাগে প্রস্তাবই যায়নি।’ আরও যোগ করেন তিনি।