এক ব্যক্তি মদ কেনার টাকা জোগাড় করতে নয় মাসের শিশুপুত্রকে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সগারাম লোহার নামের ওই ব্যক্তির স্ত্রী মঙ্গলবার ভারতের ওড়িশা রাজ্যে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান যে, একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে জোর করে তার কাছ থেকে ছেলেকে কেড়ে নেন বাবা। তারপরে দুই ব্যক্তির হাতে তুলে দিয়ে দশ হাজার টাকা নেন।

নবরঙ্গপুর জেলার উমরকোট থানা এলাকার বাসিন্দা মি. লোহার এরপরে শ্বশুর বাড়িতে গেলে সেখানে আত্মীয়স্বজন ছেলের কথা জানতে চায়। জবাবে তিনি জানান, ছেলে মারা গেছে।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে- কথায় অসঙ্গতি পেয়ে মি. লোহারের স্ত্রী সন্মতির কাছে সত্যটা জানতে চাওয়া হয়। তখনই ফাঁস হয় গোটা ঘটনা।

মি. লোহারকে গাছে বেঁধে রেখে মারধর করা হয় বলেও ওড়িশার স্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্র তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে।

ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

‘আমরা অপহরণের একটি মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছি। একটাই ভাল খবর, যে বাচ্চাটাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া গেছে। একজনকে গ্রেফতারও করেছি আমরা। কিন্তু গোটা ঘটনায় ওই বাচ্চাটির বাবার ভূমিকাটা ঠিক কী – তা নিয়ে আরও তদন্ত করা দরকার বলে জানান নবরঙ্গপুর জেলার পুলিশ সুপারিন্টেডেন্ট কুশলকার নীতিন ডাগড়ু।

দু’বছর আগে ওড়িশা রাজ্যেরই ভদ্রক জেলায় অনেকটা একই রকম একটি ঘটনা ঘটেছিল।

ঐ ঘটনায় এক ব্যক্তি তার ১১ মাসের ছেলেকে ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছিলেন। একটা মোবাইল ফোন, রুপার চুড়ি আর মদ কেনার জন্য তিনি ওই কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল।

ভারতে নিজের সন্তান বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা মাঝে মাঝেই খবরে প্রকাশ পায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কন্যা সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। অভাবের সংসারে কন্যা সন্তানকে লালন-পালন আর তারপরে বিয়ের খরচ জোগাড় করা দুষ্কর হয়ে যাবে – এই ভাবনা থেকেই সন্তানকে বিক্রি করে দেন অনেকে। আবার শিশুপাচারকারীরাও দুস্থ বাবা-মাকে বুঝিয়ে শুনিয়ে শিশুসন্তান কিনে নেয়।

কখনও বিবাহ বন্ধনের বাইরে জন্ম নেওয়া সন্তানকেও পাচারকারীরা বেআইনীভাবে দেশে-বিদেশে দত্তক নেওয়ার জন্য বিক্রি করে দেয়